২০২৫ এশিয়া কাপ ক্রিকেট নিয়ে কয়েক মাস ধরে চলা অনিশ্চয়তার পর অবশেষে দেখা যাচ্ছে আশার আলো। ভারতীয় ক্রীড়া সম্প্রচার চ্যানেল সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্ক সম্প্রতি টুর্নামেন্টের বিজ্ঞাপন প্রচার শুরু করেছে। এই বিজ্ঞাপনে বাংলাদেশের নাজমুল হোসেন শান্ত, ভারতের সূর্যকুমার যাদব এবং শ্রীলঙ্কার চারিত আসালাঙ্কা থাকলেও পাকিস্তানের কোনো ক্রিকেটারের উপস্থিতি নেই। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও অনেকে মনে করছেন, সনি স্পোর্টসের এই পদক্ষেপ আসন্ন টুর্নামেন্ট নিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) থেকে হয়তো অঘোষিতভাবে সবুজ সংকেত পেয়েছে বলেই বিজ্ঞাপন প্রচার শুরু করেছে সনি। অন্যথায়, টুর্নামেন্ট নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলে এমন প্রচারণা হতো না।
ভারতের কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হলেও এখন তা কিছুটা প্রশমিত। ক্রিকবাজ জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এবং আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার ফলে কূটনৈতিক চাপ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
এশিয়া কাপ আয়োজনের বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এসিসি একটি সভায় চূড়ান্ত সূচি প্রকাশ করতে পারে। সম্ভাব্য সূচি অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর শুরু হতে পারে টি–টোয়েন্টি সংস্করণের এই আসর।
এবারের আসরে অংশ নেবে ছয়টি দল-বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। প্রাথমিকভাবে ওমান ও হংকংয়ের অংশগ্রহণের কথা থাকলেও সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী তাদের টুর্নামেন্টে রাখা হচ্ছে না।
এশিয়া কাপ আয়োজনে হাইব্রিড মডেল ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে ভারতের পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতে ম্যাচ আয়োজন করা হতে পারে। পাকিস্তান দল তাদের ম্যাচ খেলবে আমিরাতে, কারণ ভারতের মাটিতে সফর না করার পারস্পরিক চুক্তি আছে দুই দেশের বোর্ডের মধ্যে।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক। সনি স্পোর্টস ১৭ কোটি ডলারে এশিয়া কাপের চার আসরের সম্প্রচার স্বত্ব কিনেছে। এই চুক্তির আওতায় প্রতিটি আসরে অন্তত দুটি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিশ্চিত করার অনানুষ্ঠানিক চুক্তি হয়েছে। এমনকি দল দুটি ফাইনালে উঠলে তিনবারও মুখোমুখি হতে পারে।
তবে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ না হলে সনি স্পোর্টস বিপুল অর্থ ক্ষতির মুখে পড়বে, এবং এসিসিকেও আর্থিক ক্ষতি গুণতে হতে পারে। কারণ, টুর্নামেন্ট আয়োজনের ব্যয় প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যার বেশিরভাগই সম্প্রচারস্বত্ব থেকে আসবে। এই আয় এসিসির পাঁচ স্থায়ী সদস্য-বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান—মাঝে সমানভাবে ভাগ হবে।
Discussion about this post