ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
জাতীয় লিগের ম্যাচে মাঠেই সতীর্থ ক্রিকেটারের গায়ে হাত তোলার অপরাধে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন শাহাদাত হোসেন রাজীব। যে ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৯ সালের নভেম্বরে। এরই মধ্যে ১৫ মাস কেটেও গেছে। তবে বর্তমান সময়ে ভালো নেই তিনি। ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসার খরচ জোগাতে বেশ হিমশিম খাচ্ছেন শাহাদাত। যে কারণে এ পেসার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে শাস্তি মওকুফের আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন জানিয়েছেন রাজীবের আবেদন বিবেচনা করবে বিসিবি।
গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি বিসিবির কাছে শাস্তি মওকুফ ও খেলার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন রাজীব। এ বিষয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন জানিয়েছেন,‘এটি সত্যি যে আমরা রাজীবের আবেদন পেয়েছি। কিন্তু তার শাস্তি মওকুফের বিষয়ে একার সিদ্ধান্ত হতে পারে না। যে কারণে এরই মধ্যে তার আবেদন আমরা রীতি নির্ধারণী মহলে পাঠিয়ে দিয়েছি। বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটি এটি পুনর্বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন। যদি তারা মনে করেন যে শাস্তি কমানো উচিত তারা সেভাবেই সিদ্ধান্ত নিবেন।’
বিসিবি শাস্তি মওকুফ করার আগেই রাজীব আরেকটি অনাকাঙিক্ষত ঘটনা ঘটিয়েছেন। নিয়ম না মেনে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমির মাঠে অনুশীলন শুরু করেছিলেন তিনি। নিয়ম অনুসারে তিনি নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায় অনুমতি ছাড়া কোনোভাবে বিসিবির কোন ধরনের সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন না। এ বিষয়ে নিজামুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘তিনি (রাজীব) আবেদন করেছেন এটি ঠিক। কিন্তু অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন সেই বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না। তিনি এটি করতে পারেন না। তাকে অবশ্যই নিয়ম মেনেই অনুমতি নিয়ে অনুশীলন করতে হবে।’
শনিবার একাডেমির মাঠে অনুশীলন করলেও রোববার রাজীব আর তা করেননি। বিষয়টি জানাজানির পর তাকে মাঠে না ঢুকতে দিতে সিকিউরিটি বিভাগকে জানানো হয়েছে।
এরআগে শনিবার সংবাদ মাধ্যমে রাজীব জানান তার মা এখন ক্যান্সার আক্রান্ত। তৃতীয় স্টেজে আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাকে বাঁচানো কঠিন। যে কদিন বাঁচবেন তার চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। এজন্য খেলায় ফিরতে চান তিনি। তাই বিসিবির কাছে শাস্তি মওকুফের আবেদন জানিয়েছেন, ‘আমি ২৩শে ফেব্রুয়ারি বিসিবির সিইও বরাবর খেলার জন্য আবেদন করেছি। তাই অনুশীলন শুরু করেছি মিরপুর মাঠে। কিন্ত আমি জানতাম না যে নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায় আমি এই মাঠ ব্যবহার কারতে পারবো না। আমি না জেনেই ভুল করেছি। আমার আসলে কোনো উপায় নেই। আমার মা ক্যান্সার আক্রান্ত, তৃতীয় স্টেজে আছেন। তাকে বেশিদিন বাঁচানো যাবে না। কিন্তু চিকিৎসা তো চালাতে হবে। আমি নিষিদ্ধ হয়েছি প্রায় ১৫ মাস চলছে। আর কোনোভাবেই পারছিনা মাঠের বাইরে থাকতে। ক্রিকেটই আমার আয়ের পথ। আমিতো আর অন্য কোন কাজ জানি না। আর করোনার কারণে সব ধরনের উপার্জন বন্ধ। তাই মায়ের চিকিৎসা চালিয়ে নিতে আমার টাকার প্রয়োজন। এ কারণেই খেলার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি। আমি আসলে খুব ভুল করেছি। আশা করবো বিসিবি আমাকে ক্ষমা করবে।’
বাংলাদেশের হয়ে ৩৮টি টেস্ট, ৫১টি ওয়ানডে ও ৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন শাহাদাত। ২০১৫ সালের পর আর জাতীয় দলে দেখা যায়নি এই ক্রিকেটারকে। তবে ঘরোয়া লিগে নিয়োমিতই খেলতেন তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালের শেষ দিকে জাতীয় লিগের শেষ রাউন্ডের ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে ঢাকা বিভাগের হয়ে খেলার সময় অফ স্পিনার আরাফাত সানি জুনিয়রের ওপর ক্ষিপ্ত হন তিনি। যে কারণে পরে তাকে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে বিসিবি।
Discussion about this post