টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে আত্মবিশ্বাসের চূড়ায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ওয়ানডের মঞ্চে নামতেই যেন হোঁচট খেল দলটি। আবুধাবিতে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৫ উইকেটে হেরে গেল টাইগাররা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানই ছিল এগিয়ে, আর বাংলাদেশ নিজের ছন্দ খুঁজেই পেল না।
টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার পর শুরুতেই ব্যাটিং লাইনআপে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের ১২তম ওভারে স্কোরবোর্ডে তখন ৫৩ রানে ৩ উইকেট। কঠিন সময়টায় দলের হাল ধরেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাওহীদ হৃদয়। দুজনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ায় দল। তাঁদের ১০১ রানের জুটি ইনিংসে কিছুটা স্থিতি এনে দেয়, কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে হৃদয়ের রানআউট যেন সবকিছু এলোমেলো করে দেয়। এরপর আর কেউ সেই ভরসা দিতে পারেননি। ১৫৪ থেকে ২২১-শেষ ৬৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ৪৮.৫ ওভারে গুটিয়ে যায় পুরো দল।
মিরাজ ৮৭ বলে ৬০ রান করে ছিলেন ইনিংসের একমাত্র আলো। তার মতে, ‘শেষদিকে আমরা ভালো পার্টনারশিপ পাইনি। যদি ২৫০–২৬০ তুলতে পারতাম, তাহলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতে পারত।’
আফগানিস্তানের জবাবটা ছিল সংগঠিত ও ধৈর্যশীল। শুরুতে দুটি উইকেট দ্রুত হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়লেও রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রহমত শাহর ৭৮ রানের পার্টনারশিপেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় তাদের হাতে। দুই সেট ব্যাটার ফিরে গেলে কিছুটা উত্তেজনা ফিরলেও আফগান ব্যাটাররা ধীরে ধীরে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলেন। ১৭ বল বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত হয়।
ম্যাচের নায়ক ছিলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ব্যাট হাতে ৪৪ বলে ৪০ রান, বোলিংয়ে ৩ উইকেট -দুই দিকেই আলো ছড়ান এই অলরাউন্ডার। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তানজিম হাসান সাকিব সবচেয়ে কার্যকর ছিলেন, নিয়েছেন ৩১ রানে ৩ উইকেট। মিরাজ ও তানভীর ইসলাম পান একটি করে উইকেট।
তবে ম্যাচের পর সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে জাকের আলী অনিককে ঘিরে। টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্বে সিরিজ জেতালেও ব্যাট হাতে একদমই ছন্দে নেই তিনি। ওয়ানডেতে নামলেন ১৬ বলে ১০ রানে। আসলে এশিয়া কাপ থেকেই চলছে তাঁর ছন্দপতন-সেই টুর্নামেন্টে করেছিলেন মাত্র ৭১ রান, মারতে পারেননি কোনো ছক্কা। আফগানদের বিপক্ষে তিন টি–টোয়েন্টিতেও ছিল ব্যর্থতা।
তাওহীদ হৃদয় অবশ্য সতীর্থের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘একজন ক্রিকেটারের সব সময় ভালো ফর্মে থাকা সম্ভব নয়। জাকের আগেও দারুণ খেলেছে। এখন হয়তো নিজের দিনে নেই, কিন্তু এটা খারাপ সময় বলব না।’
জাকেরের পরিসংখ্যানও একথাই বলে-ওয়ানডেতে ১১ ইনিংসে ৩৭৬ রান, গড় ৪১.৭৭, তিনটি ফিফটি। শেষ অর্ধশতক এসেছে জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, আর পাকিস্তানের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টিতে তাঁর ফিফটিই এনে দিয়েছিল ৮ রানের রুদ্ধশ্বাস জয়।
এদিকে সিরিজে এখন আফগানিস্তান এগিয়ে ১–০ তে। ১১ ও ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বাকি দুটি ওয়ানডে। এখন মিরাজদের সামনে চ্যালেঞ্জ। সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে পরের ম্যাচে জিততেই হবে!
Discussion about this post