ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
সহজ ম্যাচটা প্রায় কঠিনই যেন হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু না, ম্যাচে ফিরতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। শেষ পর্যন্ত ৩৫ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখেই দারুণ এক জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে জিতে নিয়েছে সিরিজ। এখন শুক্রবার হোয়াইট ওয়াশের মিশনে সিরিজের তৃতীয়ও শেষ ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে লড়বে বাংলাদেশ।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বুধবার টস হেরে আগে বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মোস্তাফিজুর রহমানের আঁটোসাটো বোলিংয়ে ভর করে জিম্বাবুয়ে টইগাররা আঁটকে দেয় ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৪৬ রানে। জবাব দিতে নেমে ইমরুল কায়েস ও লিটন দাসের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৩৫ বল আর ৭ উইকেটে হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টিম টাইগার্স। তাতে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে স্টিভ রোডসের শিষ্যরা।
২৪৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন লিটন কুমার দাস ও ইমরুল কায়েস। ওপেনিং জুটিতে তারা গড়েন ১৪৮ রানের জুটি। এরমধ্যে ইমরুলের অবদান ছিল ৬৭ বলে ৫৯ ও লিটনের ৭৭ বলে ৮৩। ঠিক সে সময়ই সিকান্দার রাজার বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে কাভার পয়েন্টে ত্রিনপানোর হাতে ধরা পড়েন লিটন। এরপর অবশ্য রাব্বিও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। অভিষেক ম্যাচের মত গতকাল অনেকটা নার্ভাসেই ইনিংসের ২৬তম ওভারের ৫ম বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে ফিরে যান এ বাঁহাতি। তার উইকেটটিও নেন সেই রাজা।
৪ রানের মধ্যে দ্রুত লিটন ও রাব্বিকে হারিয়ে সাময়িক চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেটা একটুও বুঝতে দেননি ইমরুল কায়েস। শুরু থেকেই এ বাঁহাতি খেলেন দুর্দান্ত। সেই ধারাবাহিকতায় ৫৭বলে ইনিংসের এক পর্যায়ে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। এরপর মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে নিজেও এগিয়ে যান সেঞ্চুরির দিকে। অন্যদিকে মুশফিকুর রহীমও তাকে দেন যোগ্য সঙ্গ।
এরআগে টস জিতে বোলিংয়ে নেমে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন সাইফ উদ্দিন। মাশরাফি বিন মুর্তজার জায়গায় বোলিংয়ে এসে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে এ ডানহাতি অলরাউন্ডার ফিরিয়ে দেন হ্যামিল্টন মাসাদাকজাকে। হালকা বেরিয়ে যাওয়া বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক (১৪)। এরপর ওপেনার সিফাস জুয়াওকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৫২ রানের জুটি গড়ে অতিথিদের বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখান ব্রেন্ডন টেইলর। এরমধ্যে অবশ্য ইনিংসের ১২তম ওভারের শেষ বলে বিপজ্জনক এ জুটি ভাঙেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
জিম্বাবুয়ে ওপেনার চেয়েছিলেন মিরাজকে ওড়াতে। কিন্তু ফজলে রাব্বির হাতে সীমানায় ধরা পড়েছেন ২০ রানে। তারপরও খুব একটা স্বস্তিতে ছিল না বাংলাদেশ। কেননা ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে চারে নামা শন উইলিয়ামসকে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে টেইলর গড়েন ৭৭ রানের জুটি। এক প্রান্ত দারুণ খেলছিলেন টেইলর। অন্য প্রান্ত তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন উইলিয়ামস। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ৩০তম ওভারের তৃতীয় বলে টেইলরকে (৭৫) এলবিডব্লিয়ের ফাঁদে ফেলে ফেরান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
জিম্বাবুয়ে জুটি পেয়েছে এরপরও। পরের দুই জুটিতেই এসেছে ৪১ রান করে। কিন্তু কোনো জুটি টেকেনি লম্বা সময়, কোনো ব্যাটসম্যান শেষ পর্যন্ত পারেননি দলকে টানতে। শেষে ওঠেনি ঝড়। তবে ব্যক্তি গত অর্জনে উইলিয়ামস করেন ৪৭ রান। আর ৪৯ করে ফেরেন রাজা। সাইফ উদ্দিন, মাশরাফি, মোস্তাফিজের ত্রিমুখী পেস আক্রমণে জিম্বাবুয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে থেমে যায় ২৪৬ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে সাইফউদ্দিন ৩ উইকেট। মুস্তাফিজ, মাশরাফি, মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজ নেন ১টি করে উইকেট। এক ম্যাচ আগেই হেসে খেলে সিরিজ জিতে নেয় মাশরাফির বাংলাদেশ
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
জিম্বাবুয়ে: ৫০ ওভারে ২৪৬/৭ (মাসাকাদজা ১৪, জুয়াও ২০, টেইলর ৭৫, উইলিয়ামস ৪৭, সিকান্দার ৪৯, মুর ১৭, চিগুম্বুরা ৩, মাভুটা ৯*, টিরিপানো ৩*; মাশরাফি ১/৪৯, মুস্তাফিজ ১/৩৫, সাইফ ৩/৪৫, মিরাজ ১/৪৫, অপু ০/৪৩, মাহমুদউল্লাহ ১/২১)
বাংলাদেশ: ৪৪.১ ওভারে ২৫০/৩ (লিটন ৮৩, ইমরুল ৯০, মাহমুদ ০, মুশফিক ৪০*, মিঠুন ২৪*; জার্ভিস ০/৩১, চাটারা ০/৪৮, টিরিপানো ০/২২, মাভুটা ০/৫৬, উইলিয়ামস ০/৪৩, সিকান্দার ৩/৪৩, জুয়াও ০/৬)
Discussion about this post