আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এই জয়ের আনন্দের মাঝেই সামনে এসে দাঁড়িয়েছে এক দীর্ঘ বিরতি-প্রায় চার মাস কোনো টেস্ট নেই। পরের টেস্ট সিরিজ পাকিস্তানের বিপক্ষে শুরু হতে পারে আগামী ২৬ মার্চ, একটি ম্যাচ মিরপুরে এবং আরেকটি সিলেটে আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই লম্বা অপেক্ষা নিয়েই উদ্বিগ্ন দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
বাংলাদেশের সামনে এখন টি-টোয়েন্টির ধারাবাহিক ব্যস্ততা-আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ, এরপর বিপিএল, তারপর ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত–শ্রীলঙ্কায় টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এই পুরো সময় দলকে আর কোনো টেস্ট বা ওয়ানডে খেলতে হবে না। ফলে টেস্ট ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফিটনেস ও দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে প্রস্তুতি রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
বিশেষ করে শান্ত নিজে এখন টি-টোয়েন্টি দলের বাইরে, মুশফিকুর রহিম লিমিটেড ওভারের ক্রিকেট ছাড়ার পর কেবল টেস্টেই খেলেন না। সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, মুমিনুল হক, তাইজুল ইসলাম, হাসান মুরাদসহ অনেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চার মাস মাঠের বাইরে থাকবেন। বিপিএল খেললেও তা টেস্টের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বড় পরিসরের ক্রিকেট থেকে এই দীর্ঘ দূরত্ব টেস্ট মেজাজ ক্ষয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে।
এই শঙ্কাই ফুটে উঠল সিরিজ শেষে শান্তর কথায়। তিনি বললেন, ‘খুবই কঠিন এটা। তবে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আসলে কিছু করার নাই। যেটা আমরা সবসময় করে থাকি বা আমি অধিনায়ক হিসেবে যে জিনিসটা করতে চাই, যোগাযোগ যেন সবার সঙ্গে ভালো থাকে, ব্যক্তিগত যে অনুশীলন সেশনগুলো আমাদের হয়, ওইগুলো যেন কার্যকরভাবে আমরা করতে পারি।’
পাকিস্তান সিরিজের আগে একটি চার দিনের ম্যাচ হলে সেটা দলকে বিরাট সুবিধা দিত-এমন মত প্রকাশ করলেন তিনি। যদিও বিপিএল সামনে থাকায় সে সুযোগ মিলবে কি না তা নিয়ে তিনি নিশ্চিত নন। তবুও তিনি মনে করেন, মানসম্মত অনুশীলনই এই বিরতির সময়ে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার, ‘আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জ থাকবে। প্রত্যেকটা ক্রিকেটার নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ যেন ঠিকমতো রাখে, কার কোন জায়গায় ঘাটতি আছে, কার কোন জায়গায় উন্নতির প্রয়োজন, এই বিষয়গুলো নিয়ে যদি আমরা ক্রিকেটাররা আলোচনা করতে থাকি, তাহলে মনে হয় যে একটু তুলনামূলকভাবে চ্যালেঞ্জটা কম থাকবে।’
ঘরোয়া ক্রিকেটে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটারই প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেন না-এ অভিযোগও তুললেন অধিনায়ক। তিনি উদাহরণ দিলেন মুমিনুল, সাদমান এবং মুশফিকের, যারা সুযোগ পেলে নিয়মিত খেলেন। শান্তর আশা, তরুণ ক্রিকেটাররা সেই পথ অনুসরণ করবে। তার যুক্তি, ম্যাচ খেলার অভ্যাসই টেস্টে দীর্ঘ সময় ব্যাটিং কিংবা দীর্ঘ স্পেল বল করার মানসিকতা গড়ে দেয়।
এ ছাড়া তিনি বোর্ডের কাছেও প্রত্যাশা রেখেছেন প্রস্তুতির মান বাড়ানোর, ‘ক্রিকেট বোর্ডের কাছ থেকে আশা এতটুকুই থাকবে, অনুশীলন সুবিধাগুলো যেন ভালো হয়, পারপাজফুলি আমরা পাই… এত লম্বা বিরতির মধ্যে বাইরের কোনো একটা দলের সঙ্গে সিরিজ খেলা, চারদিনের ম্যাচ বা দেশের মধ্যেই একটা টুর্নামেন্ট খেলা… এই ধরনের যদি আমরা ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই, তাহলে সবাই খেলার মধ্যে থাকলে একটু সহজ হয়।’










Discussion about this post