নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করল ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে হারমানপ্রীত কৌরের দল। মাঠে এই জয়ের পাশাপাশি আরেকটি ইতিহাস তৈরি হয়েছে মাঠের বাইরেও-রেকর্ড পরিমাণ পুরস্কারের ঘোষণায়।
ফাইনালের আগেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) জানিয়েছিল, ট্রফি জিতলে নারী দলকে দেওয়া হবে বিশেষ আর্থিক পুরস্কার। প্রতিশ্রুতি রাখল তারা-৫১ কোটি রুপি পুরস্কার দিচ্ছে বিসিসিআই, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭১ কোটি টাকা।
এই বোনাস ছাড়াও ভারত পাচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) নির্ধারিত প্রাইজমানি-৪৪ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। ফলে ট্রফির সঙ্গে মোট পুরস্কার দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১০৬ কোটি টাকা, যা নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
ফাইনালের রোমাঞ্চও ছিল সমান। নভি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ভারত তোলে ২৯৮ রান। শেফালি ভার্মা করেন ৮৭, দীপ্তি শর্মা ৫৮। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকার লরা ভলভার্টের লড়াকু ১০১ রানও রক্ষা করতে পারেনি দলকে পরাজয়ের হাত থেকে। দীপ্তি শর্মা ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা ও সিরিজসেরা দুই পুরস্কারই জিতেছেন।
আইসিসি এবারের আসরের আগে নারী বিশ্বকাপের মোট প্রাইজমানি নির্ধারণ করেছিল ১৩.৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের আসরের তুলনায় চারগুণ বেশি। আশ্চর্যের বিষয়, এবার নারীদের পুরস্কার অর্থ পুরুষদের ২০২৩ বিশ্বকাপের (১০ মিলিয়ন ডলার) চেয়েও বেশি। এটি শুধু সংখ্যার রেকর্ড নয়, নারী ক্রিকেটে এক নতুন অর্থনৈতিক বাস্তবতার প্রতীক।
চ্যাম্পিয়ন ভারত পেয়েছে ৪৪.৮ লাখ ডলার, রানার্স-আপ দক্ষিণ আফ্রিকা পেয়েছে তার অর্ধে-২২.৪ লাখ ডলার, যা প্রায় ২৫ কোটি টাকা। সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া দুই দল পেয়েছে ১.১২ মিলিয়ন ডলার করে। অন্যান্য দলও অবস্থান ও পারফরম্যান্স অনুযায়ী পুরস্কার পেয়েছে।
বাংলাদেশ নারী দল এবারের আসরে সপ্তম হয়েছে। লিগ পর্বে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তারা অর্জন করেছে ২.৮ লাখ ডলার স্থানগত পুরস্কার এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র জয়ের জন্য ৩৪ হাজার ৩১৪ ডলার। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের প্রাপ্ত অর্থ ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৩১৪ ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
২০২২ সালে নারী বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া পেয়েছিল মাত্র ১.৩২ মিলিয়ন ডলার, আর ২০২৩ সালে পুরুষ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার প্রাপ্তি ছিল ৪ মিলিয়ন ডলার। তুলনাটা স্পষ্ট-২০২৫ সালে নারী ক্রিকেট শুধু মাঠে নয়, অর্থনৈতিক দিক থেকেও বিশ্বমঞ্চে সমান মর্যাদার আসনে পৌঁছে গেছে।
			
                                








Discussion about this post