ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে আজ দুপুরে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে প্রতিবাদে নেমেছেন ৫০-৬০ জন ক্রিকেটার। তাঁদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল-‘ঢাকা লিগ বন্ধ কেন, ক্রিকেট বাঁচাও’, ‘সবাই মাঠে খেলতে চাই’, ‘৮৮০ জন ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার কই’। প্রায় আধঘণ্টা ধরে স্টেডিয়ামের ২ নম্বর গেটের সামনে সারিবদ্ধভাবে অবস্থান নেন তাঁরা।
পরে ক্রিকেটারদের প্রতিনিধি হিসেবে ১০-১২ জন বিসিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করে বোর্ড কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী, সহসভাপতি নাজমূল আবেদীন ও পরিচালক ইফতেখার রহমানের কাছে চার দফা দাবি তুলে ধরেন আন্দোলনরত ক্রিকেটাররা।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে লিখিত দাবিগুলো পড়ে শোনান গত মৌসুমে খেলাঘরের হয়ে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলা আসাদুজ্জামান। দাবিগুলোর মধ্যে ছিল ঢাকা লিগের জন্য একটি অপরিবর্তনযোগ্য সূচি ঘোষণা, বিসিবি ও ক্লাবগুলোর মধ্যকার চলমান দ্বন্দ্ব নিরসনে লিগের উদ্যোগ, খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ার ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে একটি টেকসই ঢাকা লিগ কাঠামো গড়া এবং ঢাকা প্রথম বিভাগ লিগে সব দল অংশ না নিলে বিকল্প হিসেবে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট চালু করা। পাশাপাশি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ক্রিকেটে ম্যাচ ফি ও দৈনিক ভাতা বাড়ানোর দাবিও জানানো হয়।
উল্লেখ্য, চলমান এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই আগামীকাল থেকে ঢাকা প্রথম বিভাগ লিগ শুরু হওয়ার কথা। অথচ ২০টি ক্লাবের মধ্যে ৮টি দল দলবদলে অংশ নেয়নি। শুধু তাই নয়, ঢাকার বিভিন্ন বিভাগের মোট ৪৩টি ক্লাব বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে ‘অবৈধ’ দাবি করে লিগে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আজ যখন ক্রিকেটাররা মাঠের বাইরে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই একাডেমি মাঠের সামনে লিগের ট্রফি উন্মোচন করা হয়। ২০ দল নিয়ে সূচি ঘোষণা হলেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ১২ জন অধিনায়ক, যা পুরো আয়োজনের অনিশ্চয়তাকেই আরও স্পষ্ট করে তোলে।
ক্রিকেটাররা জানান, সব দলকে নিয়ে যদি লিগ আয়োজন সম্ভব না হয়, তাহলে লিগ স্থগিত করে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের ক্রিকেটারদের নিয়ে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজন করা উচিত। সাধারণত ক্রিকেটারদের স্বার্থ দেখভাল করার দায়িত্ব ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)-এর হলেও আজকের এই আন্দোলনে কোয়াবের নতুন কমিটির কাউকেই দেখা যায়নি।
সম্প্রতি নির্বাচনের মাধ্যমে কোয়াবের সভাপতি হয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন। তবে আন্দোলনরত ক্রিকেটাররা জানান, প্রথম বিভাগসহ নিচের স্তরের ক্রিকেটারদের কোয়াবে ভোটাধিকার না থাকায় তাঁরা কার্যত প্রতিনিধিত্বহীন। এ কারণে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের ক্রিকেটারদের স্বার্থ রক্ষায় নতুন একটি সংগঠন গঠনের বিষয়েও আলোচনা চলছে।
কোয়াবের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন আন্দোলনের অন্যতম মুখ আসাদুজ্জামান। তাঁর ভাষায়, কোয়াব সম্ভবত বোর্ডের সঙ্গে সংঘাতে না গিয়ে বিষয়টি মসৃণভাবে সামলাতে চেয়েছে, কিন্তু ক্রিকেটাররা আর অপেক্ষা করতে রাজি নন। নিজেদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়েই মাঠে নেমেছেন বলে জানান তিনি।










Discussion about this post