হেডিংলিতে তাকে দেখে মনে হচ্ছিল, নিজেকেই যেন চিনতে পারছেন না। ব্যাটিং হোক, বোলিং বা ফিল্ডিং-সব ক্ষেত্রেই খোলসের মতো নিষ্প্রভ ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। অথচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে, এজবাস্টনে সেই চেনা জাদেজাই যেন ফিরলেন আপন রূপে। ১৩৭ বলে ৮৯ রানের এক ধৈর্যশীল ও কার্যকর ইনিংস খেলে দেখালেন, তিনি এখনও ভারতের মধ্যকার নির্ভরতার প্রতীক।
শুধু ব্যাট হাতে নয়, ভারতীয় অধিনায়ক শুভমান গিলের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ২০৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে এনে দিলেন আত্মবিশ্বাস। গিল যেখানে খেলেছেন দুর্দান্ত এক ২৬৯ রানের ডাবল সেঞ্চুরি, সেখানে জাদেজার অবদান সেই মেরুদণ্ড হয়ে থাকা ইনিংস-যা খোলসের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসার এক নিখুঁত উদাহরণ।
টেস্টের দ্বিতীয় দিনে একটা মুহূর্ত আচমকা বদলে দিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ইংল্যান্ডের বোলার ক্রিস ওকসের ওভারে বাউন্ডারি মারার পর দেখা গেল, জাদেজা হাঁটছেন পিচের সংরক্ষিত এলাকার উপর দিয়ে। এটুকুই নয়, ওভারের দ্বিতীয় বলেও রান নেওয়ার ভঙ্গি করে পা রেখেছিলেন সেই একই জায়গায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী, সেই এলাকা পিচ রক্ষার জন্য নিষিদ্ধ। বিষয়টি বুঝে ভারতের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারকে এগিয়ে সতর্ক করেন মাঠের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত।
পরের ওভারে আবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় ক্ষিপ্ত হন ওকস এবং ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। জাদেজা যদিও ব্যাখ্যা দেন-তিনি মূল পিচ নয়, পাশ দিয়ে দৌড়েছেন। বিতর্ক থেকে যায়, তবে আম্পায়ার তার ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট ছিলেন বলেই মনে হচ্ছে, কারণ কোনও জরিমানা বা আনুষ্ঠানিক সতর্কতা তখনও পর্যন্ত জানানো হয়নি।
তবু এসব বিতর্ক ছাপিয়ে যা উঠে আসে, তা হলো জাদেজার ব্যাটে জয়ের খোঁজ। হেডিংলি যেখানে তাঁকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল, এজবাস্টন সেখানে তাকে দিলো জবাব দেওয়ার মঞ্চ।
শুভমান গিল তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি-৩৮৭ বলে ২৬৯ রানের অনবদ্য ইনিংস, যাতে ছিল ৩০টি চার ও ৩টি ছক্কার সৌন্দর্য। জাদেজার সঙ্গে তাঁর ২০৩ রানের জুটিই ভারতকে এনে দেয় ৫৮৭ রানের বিশাল প্রথম ইনিংস!
Discussion about this post