গল। দুপুরের আলোটা ছিল ধোঁয়াশার মতো। মাঠে নামে বাংলাদেশ। টস জিতে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। মনে হচ্ছিল, মেহেদী হাসান মিরাজের অনুপস্থিতি, বিদেশের মাটি, অভিষিক্ত স্পিনার-এসব কিছুই তাকে দমাতে পারেনি। তবে ক্রিকেট তো কেবল সাহসের খেলা নয়, কখনও কখনও তা ভাগ্যেরও খেলা।
পঞ্চম ওভারেই ফিরে যান এনামুল হক-রানের খাতা না খুলেই। একটি খোঁচা, একটি ধরা, আর একটি হতাশ মুখ। কিছু বল পরে সাদমান, এরপর মুমিনুল। দুজনের বিদায় যেন টেস্ট শুরুর গল্পটাকে এক লাইনেই শেষ করে দিতে চেয়েছিল। ৪৫ রানে ৩ উইকেট—গল স্টেডিয়ামের বাতাস যেন তখন আরও ভারী হয়ে উঠছিল।
ঠিক সেই মুহূর্তেই, ব্যাট হাতে জেগে ওঠেন শান্ত। আরেক পাশে মুশফিক-৯৭ টেস্টের অভিজ্ঞতা যার চোখেমুখে, কাঁধে, ব্যাটে। শুরু হয় একটা জেদি লড়াই। জুটি বাঁধে দুজন। শান্তর ব্যাটে তখন তিনটি চারের টুং টাং সুর, একটি ছক্কার ঝলক। ২৫ রানে অপরাজিত, ৪৩টি বল খেলে। মুশফিকের ব্যাটে নরম অথচ দৃঢ় ভাষা-২০ রানে অপরাজিত, একটিমাত্র চার।
৭১ বলে ৪৫ রানের জুটি। যেন এক গ্রীষ্মের দুপুরে ছায়ার মতো। তীব্র রোদে যখন মাথা ঘুরতে থাকে, তখন একটি শীতল হাত এসে কাঁধে রাখে। ঠিক তেমন।
শ্রীলঙ্কার নবাগত থারিন্দু রাত্নায়াক প্রথম ঝলকেই চোখে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। ১০ ওভারে দিয়েছেন ৫০ রান, কিন্তু নিয়েছেন দুটি মূল্যবান উইকেট। একবার তো হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও তৈরি করেছিলেন। তবে শান্ত-মুশফিকের অভিজ্ঞ ব্যাট তাকে পরে বশ মানায়।
মিরাজ নেই। ইবাদত মাঠের বাইরে। চারজন বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে নামা এই দল আজ অন্য রকমভাবে ভাবছে টেস্ট ক্রিকেট। দলে এসেছে নতুন মুখ, নতুন লড়াই, নতুন প্রত্যয়।
প্রথম সেশনে স্কোরবোর্ড বলছে: বাংলাদেশ ৯০/৩। কিন্তু মাঠ বলছে-এটা একটা শুরু। আর সেই শুরুটা শান্ত। নামেই যেমন, খেলায়ও তেমন।
Discussion about this post