চট্টগ্রামের আলোয় শেষ আশাটুকুও নিভে গেল! সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ব্যর্থতার পর আশা ছিল অন্তত সম্মান রক্ষার জয়ে সিরিজ শেষ করবে বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ ম্যাচেও মিলল না প্রাপ্তির আনন্দ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৫ উইকেটে হেরে ৩–০ ব্যবধানে সিরিজ হারল বাংলাদেশ।
বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে শুক্রবার টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়েছিলেন লিটন দাস। কিন্তু শুরু থেকে শেষ-পুরো ইনিংসজুড়েই লড়াই করতে হয়েছে ব্যাটারদের। নির্ধারিত ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১৫১ রানেই থেমে যায় বাংলাদেশ। জবাবে ১৬.৫ ওভারে ১৫২ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনেও যেন একা জ্বললেন তানজিদ হাসান তামিম। বাঁহাতি এই ওপেনার ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেললেও পেলেন না কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি।
৬২ বলে ৮৯ রান—৯ চার ও ৪ ছক্কায় সাজানো দারুণ ইনিংসটি শেষ হয় রোমারিও শেফার্ডের বলে।
তানজিদের ব্যাটেই ভর করে টিকে ছিল বাংলাদেশের ইনিংস। সাইফ হাসানের সঙ্গে তার ৬৩ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি কিছুটা স্বস্তি দিয়েছিল, কিন্তু বাকিদের ব্যর্থতায় তা বৃথা যায়। দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান কেবল ২৩ (সাইফ), এরপর আর কেউ দুই অঙ্কে যেতে পারেননি।
শেষ ওভারে আসে এক ভয়ংকর মুহূর্ত-রোমারিও শেফার্ডের হ্যাটট্রিক। ১৯তম ওভারের শেষ বলে নুরুল হাসানকে আউট করার পর ২০তম ওভারের প্রথম বলেই তানজিদ ও পরের বলে শরিফুলকে বোল্ড করেন তিনি। এক ওভারে দুই উইকেট, মোট তিন বলে তিন!
১৫২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা তেমন ভালো হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দলটি। কিন্তু এরপর সব সামলে দেন রোস্টন চেইস ও আকিম ওগিস। দুজনই তুলে নেন অর্ধশতক চেইস ৫০, ওগিস ৫০। তাদের জুটিতেই আসে জয়ের ভিত্তি।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে একমাত্র উজ্জ্বল ছিলেন রিশাদ হোসেন, নিয়েছেন ৩ উইকেট। কিন্তু তারও খরচ ৪৩ রান। তাসকিন আহমেদ ছিলেন সবচেয়ে ব্যয়বহুল-৩.৫ ওভারে ৫০ রান দেন কোনো উইকেট ছাড়াই। ফিল্ডিংয়েও ছিল একের পর এক ভুল-যেন সিরিজজুড়ে দেখা একই গল্পের পুনরাবৃত্তি।
এই হারের মাধ্যমে প্রায় চার বছর পর ঘরের মাঠে কোনো টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য এটি এক ঐতিহাসিক অর্জন-প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের মাঠে ৩–০ ব্যবধানে জয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫১/১০ (তানজিদ ৮৯, পারভেজ ৯, লিটন ৬, সাইফ ২৩, রিশাদ ৩, সোহান ১, নাসুম ১, জাকের ৫, মেহেদি ০*, শরিফুল ০, তাসকিন ৯; হোল্ডার ৪-০-৩২-২, আকিল ৪-০-২৬-১, শেফার্ড ৪-০-৩৬-৩, চেইস ৪-০-২৩-১, পিয়ের ৩-০-২৩-২, মোটি ১-০-১১-০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৬.৫ ওভারে ১৫২/৫ (আথানেজ ১, জাঙ্গু ৩৪, কিং ৮, চেইস ৫০, ওগিস ৫০, পাওয়েল ৫, মোটি ৩; মেহেদি ৪-০-১৮-১, শরিফুল ২-০-১২-০, তাসকিন ৩.৫-০-৫০-০, নাসুম ৩-০-২৯-১, রিশাদ ৪-০-৪৩-৩)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ তে জয়ী
 
			 
                                








Discussion about this post