আইপিএলের আসন্ন মিনি নিলামকে ঘিরে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে আলোচনা ছিল ইতিবাচক। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ও অভিজ্ঞতার কারণে ধারণা করা হচ্ছিল, এবার একাধিক বাংলাদেশি ক্রিকেটার আইপিএলের মঞ্চে জায়গা করে নিতে পারেন। কিন্তু নিলামের ঠিক আগে জাতীয় দলের সূচি সেই আশায় বড় অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক সিরিজের কারণে আইপিএলের পুরো মৌসুমে তাদের পাওয়া যাবে কি না, সেটাই এখন ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর প্রধান চিন্তার বিষয়।
ক্রিকবাজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে আইপিএলের সম্পূর্ণ আসরের জন্য এনওসি পাওয়া নাও যেতে পারে কয়েকজন ক্রিকেটারের। আইপিএলের দলগুলো সাধারণত এমন খেলোয়াড়ই নিতে চায়, যিনি পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে দলের সঙ্গে থাকতে পারবেন। ফলে আংশিক সময়ের জন্য পাওয়া গেলে সেই ক্রিকেটারকে নিয়ে বিনিয়োগের আগ্রহ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
এই সমস্যার মূল কারণ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন সীমিত ওভারের সিরিজ। এপ্রিল মাসে কিউইদের সঙ্গে ছয়টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। নিলামে নাম দেওয়া অধিকাংশ ক্রিকেটারই জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য হওয়ায় তাদের ছাড়া ওই সিরিজ খেলার কথা ভাবা কঠিন। আবার সিরিজের সময় যদি আইপিএল চলে, তাহলে পূর্ণ সময়ের এনওসি না পাওয়ার শঙ্কাও থেকেই যাচ্ছে।
আইপিএল কর্তৃপক্ষ সাধারণত বোর্ডগুলোর সঙ্গে আগেই এনওসি বিষয়ে যোগাযোগ করে নেয়, যাতে নিলামের আগে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো খেলোয়াড়দের প্রাপ্যতা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পায়। তবুও শেষ মুহূর্তের এই অনিশ্চয়তা নিলামের কৌশলে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম মুস্তাফিজুর রহমান। সর্বোচ্চ ২ কোটি রুপি ভিত্তিমূল্যে নিলামে উঠছেন এই বাঁহাতি পেসার। আইপিএলে তার অভিজ্ঞতা ও সাফল্য তাকে বরাবরই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নজরে রেখেছে। চলমান আইএলটি-টোয়েন্টিতে দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স আবারও তার গুরুত্ব বাড়িয়েছে। তবে এনওসি নিয়ে অনিশ্চয়তা তাকে ঘিরে আগ্রহে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলতে পারে।
মুস্তাফিজ ছাড়াও নিলামে বাংলাদেশের হয়ে রয়েছেন রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব, নাহিদ রানা, রাকিবুল হাসান ও শরিফুল ইসলাম। এদের মধ্যে রাকিবুল ছাড়া সবাই জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। রাকিবুল জাতীয় দলে না খেললেও অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে তার সাফল্য উল্লেখযোগ্য। ২০২০ সালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ে তার অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ, আর নিলামে তিনি বোলার হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেও মূলত একজন অলরাউন্ডার হিসেবেই পরিচিত।
ভিত্তিমূল্যের দিক থেকে মুস্তাফিজের পরেই রয়েছেন রাকিবুল, যার ভিত্তিমূল্য ৩০ লাখ রুপি। অন্য পাঁচ ক্রিকেটার-রিশাদ, তাসকিন, তানজিম সাকিব, নাহিদ রানা ও শরিফুল-সবার ভিত্তিমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ লাখ রুপি করে। এখন সবকিছুই নির্ভর করছে এনওসি সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ওপর, যা ঠিক করে দেবে আইপিএল নিলামে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের ভবিষ্যৎ।










Discussion about this post