ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
বল হাতে খুব একটা নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি মেহেদি হাসান। তবে আগের ম্যাচের মতো ব্যাটে তুলেন ঝড়। সে সুবাদে টানা দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন এ অলরাউন্ডার। অন্যদিকে নির্ভরতার প্রতীক হয়ে তামিম ইকবাল ফিরলেন দলকে জিতিয়ে। শেষ পর্যন্ত তাদের নৈপুণ্যে জনসন চার্লসের ছক্কার মালায় সাজানো চ্যালেঞ্জ সহজেই জিতে টেবিলের দুইয়ে উঠে গেল ঢাকা প্লাটুন।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেট থান্ডারকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা প্লাটুন। ৬ ম্যাচে ঢাকার এটি চতুর্থ জয়, সমান ম্যাচে সিলেটের পঞ্চম হার।
মঙ্গলবার টস জিতে সিলেট ২০ ওভারে করে ৪ উইকেটে ১৭৪ রান। ঢাকা জিতে যায় ৯ বল বাকি রেখে।
চট্টগ্রাম পর্বের শেষ ম্যাচে চার্লস ৪ বার জীবন পেয়ে৮ ছক্কায় করেন ৪৫ বলে ৭৩ রান। ঢাকার হয়ে অমন তাণ্ডব ছিল না কারও ব্যাটে। তবে সম্মিলিত পারফরম্যান্সে তারা জিতে যায় অনায়াসেই। ৪৯ বলে ৬০ রানে অপরাজিত থেকে যান তামিম। আগের দিন ২৯ বলে ৫৯ রানের ইনিংসের পর এবার মেহেদি করেন ২৮ বলে ৫৬।
আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আন্দ্রে ফ্লেচার মঙ্গলবার শুরুতেই ফিরেন। মেহেদি হাসানের লেগ-মিডলে থাকা বল ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন বোলারের হাতেই। একই ওভারে জনসনের উইকেটও পেতে পারতেন মেহেদি। মিড উইকেট সীমানায় সহজ ক্যাচ ছাড়েন আসিফ। সেটির চড়া মূল্য দিতে হয় ঢাকাকে। জীবন পাওয়ার পর অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটেছেন জনসন। বল সীমানা পেরিয়েছে প্রায় প্রতি ওভারেই। হাসান মাহমুদকে চার-ছক্কা, মেহেদির ওভারে চার-ছক্কা, শাদাব-আফ্রিদি-ওয়াহাব রিয়াজ, পার পাননি কোনো বোলার। দলের রান যখন ৬০, জনসনের রানই তাতে ৩২ বলে ৫০! ফিফটির পর আফ্রিদিকে দুই ছক্কা হাঁকান তিন বলের মধ্যে। আরেক পাশে আব্দুল মজিদ আউট হয়ে যান ১০ বলে ৮ করে। মোহাম্মদ মিঠুন নামার পর রান আসে দুই পাশ থেকেই। শেষ পর্যন্ত জনসন আউট হন শাদাবের বলে। মোসাদ্দেক হোসেনও ছক্কার চেষ্টায় ধরা পড়েন সীমানায়। তবে জোড়া ধাক্কায় থমকে যায়নি সিলেট। মিঠুন ও শেরফেইন রাদারফোর্ড অবিচ্ছিন্ন জুটিতে তোলেন ৪৫ বলে ৬৫ রান। ৪ ছক্কায় ৩১ বলে ৪৯ রানে অপরাজিত থেকে যান মিঠুন। বিপিএল অভিষেকে রাদারফোর্ড ৩৮ করেন ২৮ বলে।
মেহেদি ৩ ওভারেই দেন ৩৩। মাশরাফি মুর্তজার জন্য ছিল আরেকটি হতাশার পারফরম্যান্স। মাঝের ওভারে বোলিং করলেও ঢাকা অধিনায়ক ছিলেন খরুচে। উইকেটশূন্য রইলেন তিনি টানা তিন ম্যাচে।
মঙ্গলবার ঢাকার জয়ের ভিত গড়ে দেন তামিম ও এনামুল হকের উদ্বোধনী জুটি। তারা দুজন তোলেন ৫৮ রান। ২৩ বলে ৩২ করে ফেরেন এনামুল। এরপর মেহেদি নেমেই সোহাগকে চার ও ছক্কা মেরে জানান দেন, আরেকটি ম্যাচ জেতানো ইনিংস আসছে। তার ব্যাটে রান আসে ঝড়ের গতিতে, তামিম খেলে গেছেন পরিস্থিতি বুঝে। দুজনের ৫০ বলে ৮৭ রানের জুটি গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য।
৮ ওভারে যখন ঢাকার প্রয়োজন ৭২, রাদারফোর্ডের এক ওভারে তিনটি চার মারেন তামিম। পরের ওভারে নাজমুল অপুর বাঁহাতি স্পিনে মেহেদি ওড়ান দুটি ছক্কায়। ম্যাচের উত্তেজনা অনেকটা শেষ ওখানেই। পরে অবশ্য ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৬ করে মেহেদি বোল্ড হন ইবাদত হোসেনকে স্কুপ করতে গিয়ে। জয় তখন নাগালেই। তামিম ও জাকের বাকি পথটুকু পাড়ি দেন সহজেই। ১১ বলে ২২ রানে অপরাজিত থেকে যান জাকের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট থান্ডার: ২০ ওভারে ১৭৪/৪ (ফ্লেচার ০, মজিদ ৮, চার্লস ৭৩, মিঠুন ৪৯*, মোসাদ্দেক ২, রাদারফোর্ড ৩৮*; মেহেদি ৩-০-৩৩-১, হাসান ৩-০-২৯-০, শাদাব ৪-০-২৩-১, আফ্রিদি ৪-০-২৬-২, ওয়াহাব ৪-০-৩৫-০, মাশরাফি ২-০-২৭-০)।
ঢাকা প্লাটুন: ১৮.৩ ওভারে ১৭৫/২ (এনামুল ৩২, তামিম ৬০*, মেহেদি ৫৬, জাকের ২২*; সোহাগ ৪-০-৪৭-০, সান্টোকি ৩-০-১৬-০, মোসাদ্দেক ৩-০-৩০-১, ইবাদত ৩.৩-০-২৪-১, নাজমুল মিলন ২-০-১৭-০, রাদারফোর্ড ২-০-২৫-০, নাজমুল অপু ১-০-১৬-০)।
ফল: ঢাকা প্লাটুন ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: মেহেদি হাসান
Discussion about this post