২০২৫ সালটি বাংলাদেশ দলের জন্য টেস্ট ক্রিকেটে যেন দুই মেরুর দুই অভিজ্ঞতা। একদিকে তিনটি জয়, যা সংখ্যার হিসেবে বিগত বছরের তুলনায় একটি শক্তিশালী অগ্রগতি। অন্যদিকে সেই জয়গুলোর মান, প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা ও সামগ্রিক পারফরম্যান্স বলছে ভিন্ন গল্প। পরিসংখ্যান যতটা উৎসাহ দিচ্ছে, মাঠের বাস্তবতা ততটাই প্রশ্ন তুলছে দলের প্রকৃত অবস্থান নিয়ে।
বছরের শুরুটা হয়েছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, সিলেটে প্রথম টেস্টের অপ্রত্যাশিত হার দিয়ে। তিন উইকেটের সেই পরাজয় বাংলাদেশের ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগকেই ঝাঁকুনি দিয়েছিল। ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষ ছিল র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে-তারপরও ব্যর্থতার কারণে সিরিজের শুরুতেই দলকে শুনতে হয় সমালোচনার সুর। তবে পরের টেস্টে বাংলাদেশ দাপট দেখায় ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতে। সিরিজ ড্র করা-যদিও ন্যূনতম প্রত্যাশা ছিল—তবু সিরিজ জয়ের ব্যর্থতা দলকে পিছু ছাড়েনি।
এরপর বছরের শেষে এসে সত্যিকারের স্বস্তি আসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। দুই ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ করে প্রতিপক্ষকে। বিস্ময়ের কিছু নেই-আয়ারল্যান্ড এখনো টেস্ট ক্রিকেটের নবীন, অভিজ্ঞতায় এবং দক্ষতায় বাংলাদেশের কাছাকাছি নয়। তাইজুল ইসলামদের দারুণ পারফরম্যান্সে দুই টেস্টেই বড় ব্যবধানে জিতলেও এই সাফল্য শক্ত দলগুলোর বিরুদ্ধে দল কতটা প্রস্তুত-সে প্রশ্নের জবাব দেয় না।
বাংলাদেশের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হয়েছিল শ্রীলঙ্কা সফরে। গলে প্রথম টেস্ট-এই বছরের অন্যতম উজ্জ্বল স্মৃতি। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর টুইন সেঞ্চুরিতে বিদেশের মাটিতে এক ঐতিহাসিক ড্র করে বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটের ২৫ বছরের ইতিহাসে মাত্র পাঁচটি ড্র, তার মধ্যে তিনটিই শ্রীলঙ্কায়। সেই ড্র দেখিয়েছে দল চাইলে লড়াই করতে পারে, পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে।
কিন্তু সেই ধারাবাহিকতা দেখা যায়নি কলম্বোতে দ্বিতীয় টেস্টে। সেখানে বাংলাদেশ ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিব্যস্ত। শ্রীলঙ্কার বোলিং আক্রমণের সামনে ব্যাটিং লাইন ভেঙে পড়ে, বোলাররাও ছন্নছাড়া। ইনিংস ও ৭৮ রানের হার-যা স্মরণ করিয়ে দেয় যে এখনও বড় দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ কতটা পিছিয়ে।










Discussion about this post