ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
আফগানিস্তান স্পিনারদের তোপে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষেই অস্বস্তিতে ছিল বাংলাদেশ। শনিবার সেটা আরও প্রকোট হয়েছে স্বাগতিক বোলারদের ছন্নছেড়া বোলিংয়ে। এ সুযোগে সফরকারীরা রানের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে টাইগারদের উপর। আর তাতে এ টেস্টে হারের শঙ্কা ভর করেছে সাকিব আল হাসানদের ওপর।
আফগানদের প্রথম ইনিংসে করা ৩৪২ রানের জবাবে শনিবার বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় মাত্র ২০৫ রানে। যে কারণে সফরকারীরা লিড পায় ১৩৭ রান। দিন শেষে তারা এ রানের সঙ্গে আরও যোগ করেছে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩৭ রান। তার মানে রশিদ খানের দল সাকিবদের চেয়ে এগিয়ে ৩৭৪ রান।
গতকালের ১৯৪ রানের সঙ্গে শনিবার কোন রান না করেই ফেরেন তাইজুল। তবে এক প্রান্ত আগলে চেষ্টা করেছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন। কিন্তু অন্য প্রান্তে থাকা নাঈম হাসান পারেননি খুব একটা সঙ্গ দিতে। যে কারণে টাইগারদের ইনিংস স্থায়ী হয় মাত্র ১৭ মিনিট। তাতে ২০৫ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। মোসাদ্দেক ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। আফগানদের হয়ে রশিদ খান নেন ৫৫ রানে ৫ উইকেট। এ নিয়ে এ লেগি টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার দেখা পান ৫ উইকেটের।
শনিবার ১৩৭ রানে পেছনে থাকলেও বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে দুর্দান্ত বোলিং করেন সাকিব আল হাসান। এ বাঁহাতি নিজের প্রথম ওভারেই সাজঘরের পথ দেখান ইহসানউল্লাহ ও রহমত শাহকে কিছুক্ষণ পরই নাঈম হাসান দারুণ এক অ্যাঙ্গেল ডেলিভারিতে স্লিপে সৌম্য সরকারের ক্যাচে সাজঘরের পথ দেখান প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান হাসমতউল্লাহ শাহেদিকে। সে সময় সফরকারীদের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ২৮। যে কারণে সফরকারীদের অল্প রানের মধ্যে বেধে জয়ের লক্ষ্যটা ধরা ছোঁয়ার মধ্যে পাওয়ার আশা করেছিল টাইগাররা। কিন্তু সেটা হতে দেননি আজগর আফগান ও ইব্রাহিম জাদরান। চতুর্থ উইকেটে এ দুই ব্যাটসম্যান স্বাগতিক স্পিনারদের কোন পাত্তা না দিয়ে ১০৮ রানের জুটি গড়েন। তার মধ্যে আজগরের অবদান ছিল ৪ চার ও ২ ছয়ে ৫০ রান। শেষ পর্যন্ত এ জুটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাস। বিপজ্জনক আজগরকে উইকেটের পেছনে সাকিবের ক্যাচে পরিণত করেন।
আজগর ফিরলেও টাইগারদের বিপদ বাড়ান ইব্রাহিম। এ ডানহাতি শনিবার এক প্রান্ত আগলে আফসার জাজাইকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে গড়েন ৩৫ রানের জুটি। তাতে আফগানদের লিড পেরিয়ে যান ৩০০। সে সময় ইব্রাহিম ছুটছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। শেষ পর্যন্ত তাকে সীমানায় মুমিনুলের ক্যাচে থামান নাঈম হাসান। এরপর দিনের বাকিটা সময় সাকিবদের জ্বালান আফসার। রশিদ খানের সঙ্গে সপ্তম ও কায়েস আহমেদের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে ছোট কিন্তু কার্যকারী জুটি গড়ে লিড বাড়াতে থাকেন। দিন শেষে যা বড় অস্বস্তি হয়ে দেখা দিয়েছে সাকিবদের জন্য।
বাংলাদেশের হয়ে ৫৩ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। এদিকে তাইজুল ও নাঈম পকেটে পুরেন ২টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান ১ম ইনিংস: ৩৪২
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২০৫ (আগের দিন ১৯৪/৮)(সাদমান ০, সৌম্য ১৭, লিটন ৩৩, মুমিনুল ৫২, সাকিব ১১, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৭, মোসাদ্দেক ৪৮*, মিরাজ ১১, তাইজুল ১৪, নাঈম ৭; ইয়ামিন ১০-২-২১-১, নবি ২৪-৬-৫৬-৩, জহির ৯-১-৪৬-০, রশিদ ১৯.৫-৩-৫৫-৫, কাইস ৮-২-২২-১)।
আফগানিস্তান ২য় ইনিংস: ৮৩.৪ ওভারে ২৩৭/৮ (ইহসানউল্লাহ ৪, ইব্রাহিম ৮৭, রহমত ০, শহিদি ১২, আসগর ৫০, আফসার ৩৪*, নবি ৮, রশিদ ২৪, কাইস ১৪, ইয়ামিন ০*; সাকিব ১৬-৩-৫৩-৩, মিরাজ ১২-৩-৩৫-১, তাইজুল ২৪.৪-৫-৬৮-২, নাঈম ১৭-২-৬১-২, মুমিনুল ১০-৬-১৩-০, মোসাদ্দেক ৪-১-৩-০)।
Discussion about this post