চট্টগ্রামের ফ্লাডলাইটে আলো ঝলমলে সন্ধ্যা, কিন্তু বাংলাদেশের ইনিংসজুড়ে ছায়া ফেলে গেল আক্ষেপ। দুর্দান্ত ছন্দে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েও সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় থামলেন তানজিদ হাসান তামিম। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেও দলের বড় সংগ্রহ এনে দিতে পারেননি তিনি। নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ থেমেছে ১৫১ রানে।
টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক লিটন দাস। আগের দুই ম্যাচে রান তাড়ায় ব্যর্থতার কথা মাথায় রেখে এবার মনোযোগ ছিল বোর্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ স্কোর গড়া। কিন্তু শুরুটা ছিল হতাশার। ২২ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ, ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ৯ রান করে ফিরলে এবং লিটন দাস করেন মাত্র ৬।
এই বিপর্যয়ের ভেতরেই শুরু হয় তানজিদের প্রতিরোধ। ধীরস্থির শুরু করে ক্রমেই আগ্রাসী হয়ে ওঠেন তিনি। পাওয়ারপ্লেতে আসে ৪০ রান, এরপর ৫৩ বলে দলের পঞ্চাশ রান পূর্ণ হয় তাঁর ব্যাটেই। রভম্যান পাওয়েলের ক্যাচ মিস তাঁকে নতুন জীবন দেয়, যা কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলেন নিজের ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস।
৬২ বলে ৮৯ রানের দারুণ ইনিংসটি সাজান ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায়। এমন ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির আভাস দিচ্ছিলেন এই তরুণ ওপেনার। কিন্তু ২০তম ওভারের প্রথম বলেই জেসন হোল্ডারের হাতে ধরা পড়েন মিড-অফে। এক বল পরেই পরিণত হয় নাটকীয়তায়-রোমারিও শেফার্ড তুলে নেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক।
আগের ওভারের শেষ বলে আউট করেছিলেন নুরুল হাসান সোহানকে, পরের দুই বলে বিদায় করেন তানজিদ ও শরিফুল ইসলামকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়লেন তিনি।
বাংলাদেশের ইনিংসে বাকিদের অবদান ছিল সীমিত। সাইফ হাসান করেন ২২ বলে ২৩, বাকিদের কেউই ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের স্কোর। সাহসী সিদ্ধান্তে ৫ নম্বরে নামানো হয় রিশাদ হোসেনকে, কিন্তু দ্রুতই ফেরেন সাজঘরে। শেষদিকে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন তাসকিন আহমেদ—হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে এক ছক্কা হাঁকালেও শেষ বলে রানআউট হয়ে ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে।
তবে ব্যর্থতার ভিড়েও আলাদা করে উজ্জ্বল তানজিদের ইনিংস। ব্যাট হাতে তিনি শুধু দলকে ভরসা দিয়েছেন তা নয়, বরং দ্রুততম বাংলাদেশি হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ১ হাজার রান পূরণ করার কীর্তিও গড়েছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫১ (তানজিদ ৮৯, পারভেজ ৯, লিটন ৬, সাইফ ২৩, রিশাদ ৩, সোহান ১, নাসুম ১, জাকের ৫, মেহেদি ০*, শরিফুল ০, তাসকিন ৯; হোল্ডার ৪-০-৩২-২, আকিল ৪-০-২৬-১, শেফার্ড ৪-০-৩৬-৩, চেইস ৪-০-২৩-১, পিয়ের ৩-০-২৩-২, মোটি ১-০-১১-০)
 
			 
                                









Discussion about this post