বাংলাদেশ ক্রিকেটে ওয়ানডে একসময় ছিল সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ফরম্যাট। ২০১৫ থেকে ২০১৯ এই সময়টায় বাংলাদেশ প্রতিপক্ষকে হারাত শৃঙ্খলা ও আত্মবিশ্বাসের ক্রিকেটে। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সেমিফাইনাল খেলে বাংলাদেশ যে জায়গায় পৌঁছেছিল, তা ছিল দীর্ঘ সময়ের অর্জন।
কিন্তু সময়ের চাকা ঘুরে গেছে। এখন আর ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ভয় পায় না প্রতিপক্ষ। ধারাবাহিকতার অভাব, ফিটনেস সমস্যা ও দলের রদবদল মিলিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের গতি যেন থেমে গেছে। আইসিসির সর্বশেষ র্যাঙ্কিংয়ে মেহেদি হাসান মিরাজের দল আছে দশ নম্বরে, রেটিং পয়েন্ট ৭৭। অপরদিকে আফগানিস্তান ৯১ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে।
এমন অবস্থায় সামনে এসেছে আরেকটি বড় বাস্তবতা-২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে হলে থাকতে হবে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ আটে। হিসাবের সময়সীমা ধরা হচ্ছে ২০২৭ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে রেটিং বাড়াতে না পারলে খেলতে হবে বাছাই পর্বে।
এই চ্যালেঞ্জ নিয়েই আজ আবুধাবিতে শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ, প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ছয়টায় টস হবে, তারপর শুরু মিরাজদের লড়াই। অধিনায়ক মিরাজ সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন সিরিজটির গুরুত্ব, ‘আমরা সবাই জানি, এই সিরিজটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সরাসরি বিশ্বকাপে যেতে হলে সেরা আটে থাকতে হবে। তাই প্রতিটি ম্যাচই এখন আমাদের কাছে টার্গেট ম্যাচ।’
এ বছর বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত খেলেছে মাত্র পাঁচটি ওয়ানডে ম্যাচ, জয় এসেছে একটিতে। এমন অনিয়মিত সময়সূচি খেলোয়াড়দের ছন্দে প্রভাব ফেলেছে বলেই মনে করেন অধিনায়ক। মিরাজ বলেন, ‘ওয়ানডে অনেক বিরতি দিয়ে খেলেছি। টানা ম্যাচ না খেললে অভ্যাসটা নষ্ট হয়। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি ওয়ানডেতে নিজেদের ছন্দে ফেরাতে।’
দলীয় পরিবর্তনের মধ্যেও কিছু ইতিবাচক দিক আছে। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান ফিরেছেন ওয়ানডে দলে। এশিয়া কাপ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর তিনি আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তিন ম্যাচেই অপরাজিত ছিলেন, দুই ম্যাচে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। যদিও ওয়ানডে ফরম্যাটে তার শেষ ম্যাচ ছিল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, তবুও পরিসংখ্যান তার পক্ষে-৭ ম্যাচে ৮২.৫০ গড়ে ১৬৫ রান, তিনবার অপরাজিত থেকে।
আফগানদের সঙ্গে আবুধাবিতে তিন ম্যাচের সিরিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে হবে যথাক্রমে ১১ ও ১৪ অক্টোবর, দুটোই সন্ধ্যা ছয়টায়। সব ম্যাচ একই ভেন্যু-জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। সেখানেই এবার নতুন সূর্যোদয়ের অপেক্ষায় বাংলাদেশ।
Discussion about this post