ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
ফিক্সিং করেননি, তবে জুয়াড়ির দেওয়া প্রস্তাব আইসিসিকে জানাননি সাকিব আল হাসান। মূলত এ অপরাধে এ তারকা ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর সব ধরণের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। দেখতে দেখতে তার নিষেধাজ্ঞার এক বছর পূর্ণ হলো। সব কিছু ঠিক থাকলে বৃহস্পতিবার থেকে তিনি মুক্ত হবেন।
গত বছর সাকিবকে দুই বছর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রায় ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। এ দুই বছরের মধ্যে এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। মূলত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে এক বছর। ভারতীয় জুয়াড়ি দীপক আগারওয়ালের কাছ থেকে তিনবার ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার ঘটনা আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগকে (এসিইউ) না জানানোয় এই শাস্তি পান সাকিব।
এরআগে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে দু’বার ও এপ্রিলে আইপিএল ম্যাচের আগে হোয়াটসঅ্যাপে আগারওয়ালের বার্তা পান সাকিব। ১৯ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আর ২৩ জানুয়ারি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে ম্যাচের আগে এ ঘটনা ঘটে। একই বছর ২৬ এপ্রিল আইপিএলে একটি ম্যাচের আগেও আগারওয়ালের কাছ থেকে বার্তা পান তিনি। অথচ আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিট কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাননি। এসিইউ কর্মকর্তাদের তদন্তে বিষয়টি বেরিয়ে আসার পর ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ও ২৭ আগস্ট সাকিবের সাক্ষাৎকার নেন তারা। তাদের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করে এসিইউর তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন সাকিব। এতে তার শাস্তিও কম করে দেয় আইসিসি অ্যান্টিকরাপশন ট্রাইব্যুনাল।
গত বছর ২৯ অক্টোবর আইসিসির রায় ঘোষণার পরই সন্ধ্যায় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবির তত্ত্বাবধানে সংবাদ সম্মেলনে নিষেধাজ্ঞা মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেন সাকিব। এরপর থেকে বেশিরভাগ সময় তিনি পরিবারের সঙ্গে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তবে গত ৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপিতে একান্তে অনুশীলনের আগেও আইসিসির অনুমতি নিয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী সব্যসাচী এ ক্রিকেটার। শ্রীলঙ্কা সফর দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন তিনি। বিসিবি চেয়েছিল, লঙ্কা সফরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট দিয়ে প্রত্যাবর্তন করবেন দেশসেরা এ ক্রিকেটার। শ্রীলঙ্কায় কোয়ারেন্টাইন জটিলতা নিয়ে শেষ পর্যন্ত সফরটি বাতিল হওয়ায় আমেরিকায় স্ত্রী-কন্যাদের কাছে ফিরে গেছেন সাকিব। বর্তমানে পরিবার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনে রয়েছেন তিনি। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন রোববার মিরপুরে প্রেসিডেন্টস কাপের ফাইনাল শেষে জানিয়েছেন, পাঁচ দলের টি২০ টুর্নামেন্ট খেলতে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেশে ফিরবেন সাকিব।
নিষেধাজ্ঞার এক বছরে খুব বেশি খেলা ‘মিস’ করেননি সাকিব। জাতীয় দলের ভারত ও পাকিস্তান সফর এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজ খেলা হয়নি তার। করোনাভাইরাসের কারণে একের পর এক সিরিজ ও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট স্থগিত হওয়ায় সাকিবকে খুব বেশি আক্ষেপে পুড়তে হয়নি। সুস্থ থাকলে ২০২১ সাল থেকে টানা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাবেন তিনি।
গত এক বছরে সাকিবকে ছাড়া ভালো খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে সে সময় এখন অতীত। প্রিয় তারকাকে ফের পাচ্ছে টিম টাইগার্স। তাই আবারও গর্জে ওঠার মঞ্চ খুঁজে পাচ্ছে তারা। যার শুরুটা হয়তো আগামী বছরের প্রথম দিকেই দেখতে পাবে টাইগার ভক্তরা।
Discussion about this post