ঢাকার ক্রিকেটের ঐতিহ্য কি? এক কথায় ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের কথাই বলেন। সারা বছর ক্রিকেটাররাও থাকেন অপেক্ষায়, কবে লীগ মাঠে গড়াবে আর কবে হবে দলবদল! কিন্তু নানা জটিলতায় লীগের সেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। আগামী ১০ই অক্টোবর লীগ মাঠে গড়ানোর কথা থাকলেও তা নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট সংশয়। শুধু তাই নয়, ক্রিকেট ক্যালেন্ডার থেকে হারিয়ে গেছে লীগের একটি মওসুমও। এবার দলবদলের বাকি ৩ দিন। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলের তারকা অনেক ক্রিকেটার দল না পেয়ে ভুগছেন অস্বস্তিতে।
আর এসব নিয়ে ঢাকা ক্রিকেট কমিটি অব মেট্রোপলিশের (সিসিডিএম) জোরালো ভূমিকা বা পদক্ষেপ না থাকাকে দায়ী করেন আসরের চ্যাম্পিয়ন দল গাজী ট্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের (লিজেন্ড অব রূপগঞ্জ) চেয়ারম্যান ও ক্রিকেট সংগঠক লুৎফর রহমান বাদল। তিনি বলেন, ‘আমি বলবো এটি ক্রিকেট বোর্ডের ব্যর্থতা। আমার মনে হয় খুব কাঁচা হাতে এই আয়োজন হচ্ছে। যদি লীগে ক্রিকেটররাই না খেলতে পারেন তাহলে এই দায়তো বিসিবি’র উপরই পড়বে। এছাড়াও আমার মনে হচ্ছে সিসিডিএম বলে কিছুই নেই। কারণ সিসিডিএম’র দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ঢাকার বাইরের একজনকে। এতে প্রশ্ন জাগতেই পারে- সিসিডিএম’র দায়িত্ব নেয়ার মতো ঢাকায় কেউ নেই? দেখুন সিসিডিএম থেকে কোন সিদ্ধান্ত আসছে কি? দলবদল থেকে শুরু করে সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বোর্ড। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ না করে উল্টো বোর্ড ক্ষমতার একচ্ছত্র ব্যবহার করছে। আসলে আমরা ক্রিকেটকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে পিছনেই হাঁটছি।’
গাজী ট্যাংক (লিজেন্ড অব রূপগঞ্জ) চেয়ারম্যান বললেন এবারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে দল গুছিয়ে নিচ্ছেন তারা। জাতীয় দলের অন্যতম তারকা সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল এবারও দলটির অন্যতম শক্তি। তরুণ ও অভিজ্ঞদের নিয়ে তাদের এবারের দলটি বেশ শক্তিশালী বলেও দাবি করেন দলটির চেয়ারম্যান। এবার নুরুল হাসান সোহান, রকিবুল, অলক কাপালি, লিমন, নাজমুল, নাঈম ইসলাম জুনিয়র, জুনায়েদ, শরীফুল্লাহদের নিয়ে দলটিকে ব্যালেন্স মনে করেন তিনি। কিন্তু সাকিব আল হাসানকে ক্রিকেট বোর্ড আরচণবিধি ভাঙার দায়ে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছে ৬ মাসের জন্য।
তবে দুই/তিন দিনের মধ্যে তার আপিলের ভিত্তিতে বোর্ড মিটিংয়ে সাজা কমানোর সিদ্ধান্ত হতে পারে। তেমন হলে সাকিব অধিনায়ক হিসেবে দলটির নেতৃত্ব দিবেন বলে জানান, লুৎফর রহমান বাদল। তিনি বলেন, ‘আমরা সাকিবের জন্য পুলের একজন ক্রিকেটার কম নিয়েই খেলবো। যদি তার সাজা কমে আর পুলভুক্ত করা হয় তাহলে যেন সে আমাদের দলেই খেলতে পারে।’ তবে সাকিবের শাস্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি যে, অবিচার হয়েছে।’ এছাড়াও আগামী ১০ই অক্টোবর লীগ মাঠে গড়ানো নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন লুৎফর রহমান বাদল। তিনি বলেন, ‘ আগামী ১০ই অক্টোবর লীগ মাঠে গড়াবে, আমার মনে হয় না। কারণ ৮ই অক্টোবর কোরবানির ঈদ। আর তা হলে কিভাবে মাঠে গড়াবে লীগ?’
ঘরোয়া ক্রিকেট ক্যালেন্ডার নিয়ে ক্রিকেট বোর্ডের কোন সঠিক পরিকল্পান নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘এভাবে না দেখেশুনে তারিখ দেয়াটা অপরিপক্কতা ও অপরিকল্পনারই সামিল। এসব করেই ঘরোয়া ক্রিকেটকে ধ্বংস করা হচ্ছে। ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে অবহেলা তাই আমাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও কোন ভাল ফল আসছে না। শুধু তাই না, আমরা দেশের মাটিতে হংকংয়ের কাছে হেরে গেলাম, একটি বিশ্বকাপে এত খারাপ করলাম তা নিয়ে কোন তদন্তও করা হলো না। তাহলে কিভাবে ক্রিকেট এগিয়ে যাবে। একে একে অস্ট্রেলিয়ান হাই প্রোফাইল কোচদের বদলে বাংলাদেশ দলে লঙ্কান লো গ্রেডের কোচই বা কেন আনা হচ্ছে? আমিতো বলবো আমরা উপরে না গিয়ে নিচের দিকেই নামছি।’
সুত্র: দৈনিক মানবজমিন
৮ আগস্ট ২০১৪, শুক্রবার
Discussion about this post