তার রেকর্ড কিন্তু খুব খারাপ ছিল না। তার অধিনে ১৯ টেস্টের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া জেতে ১০টিতে। হার ৬টিতে এবং বাকি ৩টি ড্র। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বিদেশী কোচ দক্ষিণ আফ্রিকার মিকি আর্থার দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে পারেননি। তার আমলে অজিদের মাঠের ব্যর্থতার সঙ্গে যোগ হয়েছিল দলীয় কোন্দল আর বিশৃঙ্খলা। সর্বশেষ নজীর নাইটক্লাবে ডেভিড ওয়ার্নারের মারামারি। তাই আর্থারের চাকরিটা বেশ নড়বড়েই হয়ে উঠেছিল। সেই জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) গুরুত্বপূর্ণ অ্যাশেজ সিরিজ শুরুর ঠিক আগে বরখাস্ত করল আর্থারকে। তার জায়গায় অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের নতুন কোচ হলেন সাবেক অজি ব্যাটসম্যান, ৪৫ বছর বয়সী ড্যারেন লেহম্যান। যিনি এর আগে অজি ‘এ’ দলের দায়িত্বে ছিলেন। তার সঙ্গে সিএ ২০১৫ পর্যন্ত চুক্তি করেছে। তার মানে ২০১৫ বিশ্বকাপ পর্যন্ত অজিদের কোচ থাকছেন লেহম্যান।
দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ান লেহম্যান বলেছেন তিনি দলে আত্মবিশ্বাস আর আনন্দ ফিরিয়ে আনতে চান। ক্রিকেট খেলাটা যে উপভোগের এটাই খেলোয়াড়দের বোঝাতে চান। মাঠে ও মাঠের বাইরের জীবনে অজি সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটিয়ে ক্রিকেটাররা যাতে তাদের সেরাটা দিতে পারে সেটাই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন লেহম্যান। একই সঙ্গে খেলোয়াড়দের প্রতি আহবান জানিয়েছেন, ক্রিকেট এবং নিজেদের প্রতি সত্ থাকার জন্য। বলেছেন ‘ এই মূহুর্তে অজি ক্রিকেট একটা ডামাডোলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমার প্রথম কাজ হবে এই ডামাডোল থেকে বেরিয়ে আসা। যে অস্থিরতা বিরাজ করছে দলে তা দূর করা। এর জন্য দরকার কিছু জয়। খেলোয়াড়দের আমি তাই বলেছি। কয়েকটি জয়ই বদলে দিতে পারে দৃশ্যপট। জাগিয়ে তুলতে পারে আত্মবিশ্বাস। আমি জানি খেলোয়াড়দের সে সামর্থ্য আছে।’
অস্ট্রেলিয়ার কোচ হওয়ার ইচ্ছে আগেই প্রকাশ করেছিলেন লেহম্যান। এবার দায়িত্ব পেয়ে তাই উচ্ছসিত। তবে তার মধ্যেও সংযম ধরে রেখেছেন। কারণ জানেন, তার প্রথম পরীক্ষাই অ্যাশেজ। যে সিরিজে দেশের মাটিতে ইংল্যান্ড সব হিসেবেই ফেভারিট। বলেছেন ‘ আমি সততার সঙ্গেই আমার দায়িত্ব পালন করতে চাই। এটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে আইপিএল, অজি ‘এ’ দল, রাজ্য দল ইত্যাদিতে কোচ হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতাই আমার পাথেয়। আমার অন্যতম কাজ হবে খেলোয়াড়দের সঙ্গে একটা সহজ সম্পর্ক গড়ে তোলা। অজি ক্রিকেটকে ফের তুলে ধরাই আমার টার্গেট।’
২০১১ সালের নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার দায়িত্ব পেয়েছিলেন আর্থার। কিন্তু তার রেকর্ড যাই হোক না কেন, দলের ভেতর কোন্দল এবং বিশৃঙ্খলা রুখতে ব্যর্থ হন তিনি। ভারত সফরে ধোলাই হওয়া টেস্ট সিরিজে তার নির্দেশ না মানার জন্য দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল শেন ওয়াটসন, মিচেল জনসন, জেমস প্যাটিনসন ও উসমান খাজাকে। সবশেষ নাইট ক্লাবে ইংল্যান্ডের জো রুটের সঙ্গে মারামারি করে অ্যাশেজে টেস্ট শুরুর আগে পর্যন্ত নিষিদ্ধ হন ওয়ার্নার। এ সব ঘটনাই তার ওপর সিএর আস্থা কমিয়ে দেয়। কারণ দলের পারফরম্যান্সে তার ছাপ পড়ছিলই। লেহম্যান অবশ্যই জানিয়ে দিয়েছেন, খেলোয়াড়দের স্বাধীনতায় তিনি একটা সীমা পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করবেন না। এখন দেখার অ্যাশেজ পরীক্ষায় লেহম্যানের রিপোর্ট কার্ড কেমন হয়?
Discussion about this post