ইংল্যান্ডের মাটিতে শুভমান গিল যেন নতুন করে জন্ম নিলেন। এজবাস্টনের মঞ্চে সেই আলোয় ঝলসে উঠল এক বিশুদ্ধ ব্যাটিং মহাকাব্য। ভারতের হয়ে দ্বিতীয় টেস্টেই অধিনায়কত্ব করতে নামা এই তরুণ ডানহাতি ব্যাটার, ২৫ বছর বয়সে তুলে নিলেন জীবনের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি, সেটিও বিদেশের মাটিতে, ইংল্যান্ডের বুকে।
যখন ৯৪ রানে ছিলেন, তখন জো রুটকে চতুর দক্ষতায় পরপর দুটি চার মেরে শতক স্পর্শ করেন। সেঞ্চুরির পর গতি থামাননি। ব্যাটে বাড়াতে থাকেন আস্থা ও দখল। আজ ১৮৭ রানে পৌঁছে আবারো দেখালেন আগ্রাসী মনোভাব-জশ টাংয়ের ওভারে দুটি চার মেরে চলে গেলেন ১৯৫-এ। এরপর কিছু সময় পর সেই টাংয়ের শর্ট লেংথ বলকে পুল করে এক রান নিলেন ফাইন লেগে—ডাবল সেঞ্চুরি! হেলমেট খুলে গর্জে উঠলেন। এ উদ্যাপন যেন শুধুই রান পাওয়া নয়, বরং দীর্ঘদিনের চাপ ও প্রশ্নচিহ্নকে ছুঁড়ে ফেলার এক অভ্যুত্থান।
এটি শুধু একটি ইনিংস নয়, একাধিক রেকর্ডের জন্ম। তিনি এখন ভারতের ষষ্ঠ অধিনায়ক যিনি টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। তবে আরও বড় রেকর্ড হলো—ভারতের হয়ে ইংল্যান্ডে অধিনায়ক হিসেবে এটিই প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। গিল এর আগেই হেডিংলিতে সেঞ্চুরি করেছিলেন, সেটি যেন ছিল মহারণের পূর্বাভাস। এবার এজবাস্টনে নিজেকে ছাড়িয়ে গেলেন, ছাড়িয়ে গেলেন আজহারউদ্দিন, গাভাস্কার, দ্রাবিড়ের মতো কিংবদন্তিদেরও।
মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন ১৯৯০ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে করেছিলেন ১৭৯, সেটিই ছিল এতদিন ভারতের কোনো অধিনায়কের ইংল্যান্ডে সর্বোচ্চ। গিল সেটি পেরিয়ে এখন এককভাবে শীর্ষে। ১৯৭৯ সালে গাভাস্কার করেছিলেন ২২১, ২০০২ সালে দ্রাবিড় করেছিলেন ২১৭—তাদেরকেও টপকে গেলেন গিল। এমনকি তিলকারত্নে দিলশানের ২০১১ সালের ১৯৩ রানের ইনিংসকেও ছাড়িয়ে, গিল এখন এসইএনএ দেশগুলোতে সর্বোচ্চ রান করা এশিয়ান অধিনায়ক।
এই কীর্তি তাকে শুধু ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসেই নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের প্রসঙ্গেও নিয়ে আসছে আলোচনার কেন্দ্রে। সামনে এখন আর মাত্র একটি মাইলফলক—ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। কোহলি ২০১৯ সালে করেছিলেন ২৫৪ রান। গিল তাকে ছাড়িয়ে করলেন ২৬৯ রান!
Discussion about this post