গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনটা যেন ছিল বাংলাদেশি ব্যাটারদের আত্মবিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি। শুরুটা যদিও এক ধাক্কায় হয়েছিল—প্রথম সেশনের শুরুতেই ফিরে যান আগের দিন সেঞ্চুরি করা নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে শান্তর বিদায়ের পর ব্যাট হাতে দায়িত্বের সঙ্গে এগিয়ে চলেছেন মুশফিকুর রহিম, আর তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন লিটন দাস।
৩ উইকেটে ২৯২ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ প্রথম সেশনে হারিয়েছে মাত্র এক উইকেট, তুলেছে ৯১ রান। লাঞ্চের সময় স্কোরবোর্ডে ৪ উইকেটে ৩৮৩ রান, যা সফরকারী দলের জন্য এই পর্যায়ে বড় সুবিধার ইঙ্গিত।
নাজমুল শান্ত আজ দিনের শুরুতে ছিলেন একটু অস্বস্তিতে। ১৪২ রানে একবার এলবিডব্লিউ হয়ে গিয়েছিলেন, রিভিউ বাঁচিয়ে দেয় তাকে। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ইনিংসের ১৪৮ রানে শেষ হয় তার সংগ্রাম-আসিথা ফার্নান্দোর বল ব্যাট ছুঁয়ে উঠে গেলে মিড অফে ম্যাথুস অসাধারণ ডাইভ দিয়ে ক্যাচটি তালুবন্দি করেন। শান্তর ২৭৯ বলের ইনিংসে ছিল ১৫টি চার ও একটি ছক্কা।
শান্ত-মুশফিক জুটি থামল ২৬৪ রানে। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ উইকেট জুটিতে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। মাত্র ২ রানের ব্যবধানে হাতছাড়া হয় রেকর্ড—যা এর আগে করেছিলেন মুশফিক ও মুমিনুল, ২৬৬ রানে।
তবে শান্ত ফিরে গেলেও মুশফিক ছিলেন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত। তাঁকে কেন্দ্র করেই এগিয়ে যাচ্ছে ইনিংস। ক্রিজে তাঁর উপস্থিতিই যেন প্রতিপক্ষের উপর চাপ তৈরি করছে। ২৭২ বল মোকাবিলা করে এই মুহূর্তে তিনি অপরাজিত ১৪১ রানে। অন্যদিকে লিটন দাস, যিনি এসেছেন আগ্রাসী মেজাজে, খেলেছেন মাত্র ৫৭ বলে ৪৩ রানের একটি ঝরঝরে ইনিংস। পঞ্চম উইকেটে এই দুজনের জুটি ইতোমধ্যেই ১২৫ বল খেলে তুলেছে ৭৪ রান।
এই সেশনের শেষভাগে স্পিনাররা কিছুটা বেশি কার্যকর হয়ে উঠেছেন। বলের বাঁক দেখা যাচ্ছে, যা দিনে পরে আরও বাড়তে পারে। তবে এখন পর্যন্ত মুশফিক-লিটন জুটি সে চ্যালেঞ্জ নিয়ন্ত্রণেই রাখছে।
যদি ক্রিকেটের ভাষায় বলা হয়, এই ইনিংস একটি জটিল রচনা, তবে মুশফিক হচ্ছেন এর মূল সুরকার, আর লিটন সেই সুরে যুক্ত করেছেন তারুণ্যের ঝংকার। গলে ব্যাট হাতে যে গল্পটা বাংলাদেশ লিখছে, তা এখনো থামার কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না।
Discussion about this post