ম্যাচের ভাগ্য অনেকটাই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল আগের দিনই। তারপরও সকালে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন জাকির হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। মিশন ইমপসিবল লক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়ে দারুণ লড়ছিলেন দু’জন! সেই লড়াইয়ে জাকির তুলে নিলেন টেস্ট অভিষেকেই সেঞ্চুরি। তবে মিশন ইমপসিবলই থেকে গেছে। হার উঁকি দিচ্ছে।
চট্টগ্রাম টেস্টের এখনও বাকি ৯০ ওভার। বাংলাদেশের জিততে আরও চাই ২৪১ রান। ভারতের চাই ৪ উইকেট। সাকিব ৪০ ও মিরাজ ৯ রানে অপরাজিত। এই ম্যাচ আপাত দৃষ্টিতে নাগালের বাইরে বাংলাদেশের। ড্রয়ের চেয়ে সম্ভাবনায় এগিয়ে সফরকারীরা।
তৃতীয় দিন শেষ বেলায় নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান যে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন সেটা অন্তত লড়াইয়ের আশা দেখাচ্ছে। নিজেদের ইতিহাসে কখনও ২১৫ রানের বেশি তাড়া করে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। টেস্ট ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে কখনও করতে পারেনি ৪১৩ রানের বেশি।
এ অবস্থায় সাকিব আল হাসানের সামনে রেকর্ড নতুন করে লেখার চ্যালেঞ্জ। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫০ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে তারা খেলতে নামে ৫১৩ রানের লক্ষ্য নিয়ে। জিততে হলে রেকর্ড রান করতে হবে। এ
শনিবার সকালে নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হোসেনের ফিফটিতে ভারতের বিপক্ষে প্রথম উদ্বোধনী জুটির সেঞ্চুরি হয়। জাকির ওপেনার হিসেবে অভিষেকে প্রথম সেঞ্চুরি করে তুলে নেন। পঞ্চম দিনে ম্যাচটা টেনে নিলেন তিনিই।
১২৪ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর জাকির সময় পার করতে থাকেন। কিন্তু ইয়াসির আলী রাব্বি, লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের কাছ থেকে শক্তিশালী কোনও সঙ্গ পাননি। জাকির আউট শতরান তুলে বিদায় নেন। দ্বিতীয় ইনিংসে চাপের মুখে মাথা উঁচু করে লড়াই করলেন। তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। খেললেন ২১৯ বল।
চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিন অক্ষর প্যাটেলের বলে সুইপে চার মেরে তিন অঙ্কের ম্যাজিকেল ফিগারে পা রাখেন জাকির। বাংলাদেশের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন তিনি। বাংলাদেশের অভিষেকে প্রথম এই কীর্তি গড়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এটি অনন্য। বুলবুল দেশের অভিষেক টেস্টে করেছিলেন শতক।
এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে উঠেন অনন্য উচ্চতায় মোহাম্মদ আশরাফুল। তারপর ১০ নম্বরে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন অভিষিক্ত আবুল হাসান। এবার চতুর্থ ইনিংসে মাত্র দ্বিতীয় ওপেনার হিসেবে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন জাকির। প্রথম করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেন বাইচান। ১৯৭৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে লাহোর টেস্টে তিনি অপরাজিত ছিলেন ১০৫ রানে।
সেঞ্চুরির পরই অবশ্য বিদায় নেন জাকির হাসান। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে ধরা পড়লেন স্লিপে। করেন ২২৪ বলে ১৩ ও ১ ছক্কায় ১০০ রান।
২৩৮ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর শঙ্কা ছিল, ইনিংস না আবার শেষ হয়ে যায় চতুর্থ দিনে। শেষবেলায় সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ দাঁড়িয়ে গেলেন। তাদের ৮৪ বলে ৩৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করে স্বাগতিকরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ভারত ১ম ইনিংস: ৪০৪/১০
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫০/১০
ভারত ২য় ইনিংস: ২৫৮/২ ইনিংস ঘোষণা
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫১৩) ১২ ওভারে ৪২/০ (শান্ত ২৫, জাকির ১৭; সিরাজ ৩-০-১১-০, উমেশ ১-১-০-০, অশ্বিন ৫-১-২৩-০, আকসার ২-০-৪-০, কুলদিপ ১-০-৪-০)।
Discussion about this post