কীভাবে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের উন্নতি ঘটানো যায়, তার একটি ব্যবস্থাপত্র দিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক তারকা ‘দ্য ওয়াল’ রাহুল দ্রাবিড়। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ‘ক্রিকইনফোর’ ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘ক্রিকইনফো ফর ক্রিকেট’ নামের একটি অনুষ্ঠানে সাবেক গ্রেট ব্যাটসম্যানের পরামর্শ-ক্রিকেটের অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশগুলো বা তাদের নির্বাচিত একাদশ অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিয়মিত অংশ নিতে পারে। উদাহরণ দিয়েছেন বাংলাদেশকে টেনে। তার মতে, বাংলাদেশ নিয়মিত ভারতের প্রথম শ্রেণির ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নিলে তাদের ক্রিকেট নিশ্চিতভাবেই উপকৃত হবে। কারণ দীর্ঘপরিসরের ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা লাভ করবে বাংলাদেশ। যেটা টেস্টে বাংলাদেশকে ভালো খেলার ভিত গড়ে দিতে পারে।
দ্রাবিড় বলেন-‘বাংলাদেশে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বিস্মিত করার মতো। ক্রিকেট নিয়ে ওখানকার মানুষের আবেগ ভাবা যায় না। পাশাপাশি ক্রিকেট প্রতিভারও অভাব নেই দেশটিতে। কিন্তু বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে এখনও নিজেদের সেভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি বাংলাদেশ। কারণ ওদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের দুর্বল অবকাঠামো। যেখান থেকে শিখে টেস্ট ক্রিকেটে আসতে হয়। মনে রাখতে হবে, টেস্ট ক্রিকেট খেলা শেখার জায়গা নয়। তাই শক্তিশালী দেশগুলোর উচিত অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলগুলোকে তাদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলার সুযোগ দেওয়া। ভারত যেমন সুযোগ দিতে পারে বাংলাদেশকে, জিম্বাবুয়ের জন্য রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ডের জন্য রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। খুব বেশি দেশ তো ক্রিকেট খেলে না তাই এই পরিবার থেকে কেউ সরে দাঁড়াক, সেটা কাম্য হতে পারে না।’
সাবেক ভারত অধিনায়ক আবারও বলেছেন, ‘টেস্টই ক্রিকেটের প্রাণভোমরা। টেস্ট ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থাকলে অন্য যে কোনো ফরম্যাটের ক্রিকেটে ভালো ফল করা সম্ভব, ভালো খেলা সম্ভব। তাই টেস্ট ম্যাচই হচ্ছে ক্রিকেটের গোড়া। সেটা যদি শুকিয়ে যায়, তাহলে ক্রিকেটই শঙ্কার মধ্যে পড়বে।’ দ্রাবিড় টেস্ট ক্রিকেটকে বড় গাছ এবং সীমিত ওভারের ম্যাচ ও টি-টুয়েন্টিকে গাছের শাখা-প্রশাখার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তার খুব সহজ কথা-‘গাছের ভালো যত্ন নিতে পারলে তবেই তার ফল ভালো হয়।’ দ্রাবিড়ের অকাট্য যুক্তি-‘টেস্ট ম্যাচ ক্রিকেটারের ধৈর্যের পরীক্ষা নেয়। তাই ক্রিকেটের ভিত্তি শক্ত করতে টেস্ট ম্যাচ খেলা খুবই জরুরি। টেস্ট ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ভালো পারফরম্যান্স করলে যে কোনো ফরম্যাটে ভালো ফল করা সম্ভব।’
তবে টেস্ট ক্রিকেটের গুরুত্ব সবার ওপরে রাখলেও দ্রাবিড় কিন্তু টি-টুয়েন্টির বিনোদনকে ছুড়ে ফেলেননি। বরং টি-টুয়েন্টির অপরিসীম গুরুত্বের কথাও বলেছেন তিনি। তার মতে, বর্তমান সময়ের ক্রিকেটারদের আর্থিক নিশ্চয়তা দিতে টি-টুয়েন্টির বিকল্প নেই। বলেন-টি-টুয়েন্টি একজন ক্রিকেটারকে অভিজ্ঞতার পাশাপাশি আর্থিক চাহিদা মেটায়, যা ক্রিকেটের জন্য প্রয়োজন। তবে একই সঙ্গে দ্রাবিড় হুশিয়ার করে দেন, তরুণ প্রজন্মকে টি-টুয়েন্টির জোয়ারে ভেসে যেতে দেওয়া যাবে না।
Discussion about this post