গোটা বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিল তার দিকে। তিনি নিজেও ৩৩ রানের সেই পথ পাড়ি দেয়ার দ্বায়িত্বটা কাধে তুলে নিয়েছিলেন। সঙ্গী ছিলেন তাইজুল ইসলাম। অপেক্ষায় ছিলেন শফিউল ইসলাম। তাদের নিয়ে স্বপ্নপূরণের মিশনে নামেন সাব্বির। চট্টগ্রামে সেই সকালটা রাঙিয়ে তোলার মঞ্চ ছিল প্রস্তুত। মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ড বধের কাব্য লিখে নায়ক হয়ে উঠবেন সাব্বির রহমান রুম্মন। কিন্তু সকালটা যে টাইগারদের হল না। ২১ বল ১৯ মিনিট। তারপরই শেষ হল হৃদয়ভাঙ্গা এক টেস্ট ম্যাচের। যেখানে অসহায়ের মতো শুধু অপর প্রান্ত দাড়িয়ে দুই সতীর্থের উইকেটে আসা-যাওয়া দেখলেন সাব্বির!
সোমবার ম্যাচ জিতে মাথা উঁচু করে ফেরা হল না। ৬৪ রানে অপরাজিত, ব্যস এটুকুই! ২২ রানের ট্র্যাজেডি লেখা হয়ে গেল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সবুজ গালিচায়।
টাইগারদের ঐতিহাসিক জয়ের পথে বাধা হয়ে দাড়ালেন বেন স্টোকস। তার তিন বলের ঝড়ে সব শেষ। নায়ক হওয়ার সুযোগই পেলেন না সাব্বির। চোখের জল ফেলে ছাড়লেন মাঠ। দুই সতীর্থ ব্যাটসম্যান তাইজুল আর শফিউল আউট হতেই বসে পড়েন মাঠে। স্টুয়ার্ট ব্রডদের সান্ত্বনাতে কী আর সেই দুঃখ কাটে! এতো কাছে গিয়েও হল না। তার কষ্টটা কেউ বুঝবে না!
চট্টগ্রাম টেস্টে সোমবার ২৮৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের জয়ের জন্য দরকার ছিল ২ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৩ রান। শুরুটা ভাল করেছিলেন সাব্বির ও তাইজুল। দুজন মিলে জয়ের ব্যবধান নিয়ে আসেন ২৩-এ। এরপর স্টোকসের সেই ওভার।
স্টোকসের বল তাইজুল প্যাডে আঘাত হানলে লেগ বিফোরের আবেদন করে ইংল্যান্ড। কুমার ধর্মসেনা সেই আবেদনে সাড়া না দেয়ায় রিভিউ নেয় ইংল্যান্ড। থার্ড আম্পায়ার জানিয়ে দেন তাইজুল আউট।
তৃতীয় বলে আম্পায়ার ধর্মসেনা শফিউলকে আউট দিলে রিভিউ চায় বাংলাদেশ। এবারো সুসংবাদ আসলো না। টেস্ট শেষ, উল্লাসে মাতে ইংল্যান্ড।
তারপরও ইনিংসটা ব্যাক্তিগতভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে সাব্বিরের। অভিষেক টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হাফসেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়েন তিনি। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে এবার ঢাকায় কিছু করার পালা তার। ২৮ অক্টোবর মিরপুরে শুরু হবে সিরিজে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।
Discussion about this post