শত কোটিরও বেশি মানুষের দেশ হলেও অলিম্পিকে একেবারেই আধিপত্য নেই ভারতের। তাইতো অল্প কিছু অর্জনই তাদের আনন্দে ভাসিয়ে দেয়। তেমনই এক প্রাপ্তিতে এখন দারুণ উচ্ছসিত গোটা ভারত। প্রথম ভারতীয় নারী হিসেবে অলিম্পিক্সের কুস্তিতে ব্রোঞ্জ পদক জিতলেন সাক্ষী মালিক। অথচ তিনি পদক জিতবেন এমন আশা কেউ করেন নি!
তাইতো একদিনের ব্যবধানেই ভারতে কুস্তি নিয়ে আগ্রহ অনেকটাই বেড়ে গেছে। দেশটির পত্রিকা ‘এবেলা’ জানিয়েছেন, ‘কুস্তি নিয়ে কয়েকমাস আগেও তুমুল উন্মাদনা দেখা গিয়েছিল। তবে তা ‘সুলতান’-এর সৌজন্যে। ‘সুলতান’-এর কাহিনি কুস্তিকে ঘিরে আবর্তিত। নায়ক সুলতানও কুস্তিগীর, নায়িকা আরফাও। বলা ভাল, আরফার মন জিততেই কুস্তিগীর হওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সুলতান। আর আরফার স্বপ্ন ছিল কুস্তিতে অলিম্পিক্সে দেশের জন্য পদক জেতা। তার জন্য প্রথমে সুলতানের প্রেম প্রত্যাখ্যানও করেছিল আরফা। কিন্তু ‘সুলতান’-এর নায়িকা আরফা শেষ পর্যন্ত একজন ভারতীয় নারী, ছবি বলিউডের এবং নায়ক সালমন খান।
ভারতীয় মহিলা অলিম্পিক্সে গিয়ে কুস্তিতে পদক জিতে আসবেন, ছবির গল্প এই খাতে এগোলে দর্শক নাও ‘খেতে’ পারে। ফলে ‘সুলতান’-এর আরফা নিজের স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে সংসারী হয়ে যান, আর অনেক পরে কুস্তি শিখেও দেশ, বিদেশে টপাটপ পদক জিতে বিখ্যাত হন নায়ক সুলতান।
‘সুলতান’-এর নায়িকা আরফার মতো বাস্তবের সাক্ষী মালিকেরও ছোট থেকে স্বপ্ন ছিল অলিম্পিক্সে দেশের হয়ে পদক জেতা। অলিম্পিক্সে পদক জয়ের পরে নিজেই সেকথা জানিয়েছেন সাক্ষী। ‘সুলতান’-এর আরফা ছিলেন হরিয়াণার গ্রামের মেয়ে, সাক্ষী মালিকও তাই। সিনেমার আরফার মতো বাস্তবের সাক্ষীর কোনও প্রেমিক আছে কি না, এখনও জানা যায়নি। প্রেমিক থাকুক বা না থাকুক, ভাগ্যিস সিনেমার গল্পের মতো সাক্ষী নিজের স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দেননি। তাহলে তো তাঁর নিজের মতো একশো তিরিশ কোটি ভারতবাসীরও স্বপ্নপূরণ হত না।
সাক্ষী প্রমাণ করলেন, বাস্তবটা সিনেমার থেকেও কঠিন। আর সিনেমার গল্প তো বাস্তবের থেকেই অনুপ্রেরণা পায়। ‘সুলতান’-এর শেষে দেখা গিয়েছিল, স্বামীর হাত ধরে ফের কুস্তির রিংয়ে ফিরেছেন আরফা। ‘সুলতান’-এর বিপুল সাফল্যের পরে ইতিমধ্যেই ‘সুলতান-২’ তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। বাস্তবের আরফা ওরফে সাক্ষীর এই কৃতিত্বের পরে কি ‘সুলতান-২’-এ একটু অন্যভাবে ভাবার সাহস দেখাবেন পরিচালক? কে জানে নতুন কোন গল্প অপেক্ষা করছে কীনা!
Discussion about this post