গত মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে দু-দু’বার বিধ্বস্ত হতে হয়েছিল বার্সেলোনাকে। ম্যাচ দুটি বড় একটা প্রশ্নেরও জন্ম দিয়েছিল। এখনও কি বার্সাকে বিশ্বসরা ক্লাব বলা যায়? ফুটবলপণ্ডিতরা ম্যাচ দুটিকে বিশ্ব ক্লাব ফুটবলে বার্সেলোনার শ্রেষ্ঠত্বের পতন হিসেবে দেখেছিলেন। আর স্প্যানিশ জায়ান্টদের সেই অভিজাত জায়গাটা নিয়ে নেয় বায়ার্ন মিউনিখ। গত মৌসুমের এ সত্যটা এবার যেন আরও শক্ত ভিত পেল। আবার জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে যেতে হয়েছে বার্সেলোনাকে। বুধবার অ্যালিয়েঞ্জ এরেনায় বায়ার্ন জিতেছে ২-০ গোলে।
গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের প্রথম লেগে এ মাঠেই বার্সাকে ৪-০ তে উড়িয়ে দিয়েছিল বায়ার্ন। পরের লেগে ন্যু ক্যাম্প থেকে ৩-০ গোলে জিতে এসেছিল জার্মান জায়ান্টরা। দুই লেগ মিলে সাত গোল খেতে হয়েছিল বিশ্বসেরা ক্লাবটিকে। বিপরীতে বায়ার্নের জালে একটি গোলও করতে পারেনি কাতালানরা। বুধবারের প্রীতি ম্যাচেও বায়ার্নের জাল খুঁজে পেল না বার্সেলোনার স্ট্রাইকাররা।
প্রীতি ম্যাচ হলেও এ ম্যাচ নিয়ে দারুণ আগ্রহ ছিল বিশ্বের সব প্রান্তের ফুটবলপ্রেমীদের কাছেই। উত্সুক হয়েছিলেন মেসি-নেইমার জুটি দেখার। কিন্তু মেসি একাদশে থাকলেও নেইমারকে নামানো হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে শুরুর একাদশের প্রায় পুরোটাই পরিবর্তন করেন ভারপ্রাপ্ত কোচ জোর্দি রৌরা। কিন্তু নেইমারকে নামাননি তিনি। কারণটা হয়তো ফিটনেস। পায়ের ইনজুরি থেকে সেরে উঠলেও ফিটনেসের কিছুটা অভাব ছিল স্যান্টোসের এ ব্রাজিলিয়ান তারকার।
এ ম্যাচে দু’দলই করেছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। মূল স্ট্রাইকার ছাড়াই একাদশ সাজান পেপ গার্দিওলা। অন্যদিকে নেইমার, জাভি, ইনিয়েস্তাসহ বেশিরভাগ তারকা খেলোয়াড়ই ছিলেন অনুপস্থিত। তারপরও ম্যাচটা বেশ জমে উঠেছিল। ফ্রাঙ্ক রিবেরির দাপটে ফুটবলে বারবার বেসামাল হয়ে পড়েছিল বার্সার রক্ষণভাগ। খেলার ১৪ মিনিটে রিবেরির দুর্দান্ত ক্রস থেকে হেডে গোল করে বায়ার্নকে এগিয়ে নেন ফিলিপ লাম।
গত মৌসুমে বায়ার্নের বিপক্ষে এ মাঠেই একেবারে নিষ্প্রভ ছিলেন বার্সা সুপারস্টার লিওনেল মেসি। এদিনও চেনা যায়নি বিশ্বসেরা এ ফুটবলারকে। ৪৫ মিনিট খেলে তেমন কোনো আক্রমণ করতে পারেননি তিনি। ডাগআউটে দাঁড়িয়ে আরও গোল কামনা করছিলেন গার্দিওলা। খেলার শেষ হওয়ার চার মিনিট আগে কোচের সেই উত্কণ্ঠা দূর করে দেন বললি খেলোয়াড় মারিও মানজুকিচ। তার দেওয়া গোলেই ২-০ তে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বায়ার্ন।
ম্যাচটা বার্সেলোনার জন্য ছিল পরীক্ষা। পরীক্ষা ছিল পেপ গার্দিওলার জন্যও। বার্সা পরীক্ষায় পাস না করলেও গার্দিওলা ঠিকই সফল। ফুটবল ক্যারিয়ারের পুরোটাই কাটিয়েছেন বার্সেলোনাতে। এরপর চার বছর কোচিংয়ে ১৯টি ট্রফির মধ্যে ১৪টিই জিতিয়েছেন বার্সাকে। সে দলটিরই প্রতিপক্ষ হলেন গার্দিওলা।
Discussion about this post