শুরুতে অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছিলেন তিনি। এবার ঠিকই স্বীকার করে নিতে বাধ্য হলেন। কঠিন শাস্তিও মিলল। আইসিসি দুর্নীতি বিরোধী বিধির বেশ কয়েকটি ধারা ভেঙে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হলেন জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশের একসময়কার বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক।
আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী পাঁচটি ধারা ভঙ্গ করায় এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাকে। ২০১৪ থেকে ২০১৬ অব্দি বাংলাদেশ জাতীয় দলের বোলিং কোচ ছিলেন ৪৭ বছর বয়সী স্ট্রিক।
খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার শেষে কোচ হিসেবেই দুর্নীতি করেন জিম্বাবুইয়ান সাবেক অধিনায়ক। যার বেশির ভাগ ২০১৭ ও ২০১৮ সালে। এই সময়ে স্ট্রিক কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, এরকম বেশ কয়েকটি ম্যাচ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই তদন্ত হচ্ছিল। যেখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচের সঙ্গে আইপিএল, বিপিএল ও আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচও রয়েছে। বলা হচ্ছে- যেসব দলে তিনি কোচ হিসেবে কাজ করেছেন, সেখানে এক জুয়াড়ির প্রস্তাব সহজতর করতে বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন তিনি।
অবশ্য শুরুতে অভিযোগ অস্বীকার করেন স্ট্রিক। এরপর দায় স্বীকার করতে বাধ্য হন। শাস্তির মেয়াদ শুরু হয়ে গেছে তার। ২০২৯ সালের ২৮ মার্চ থেকে আবারও ক্রিকেটীয় কার্যক্রমে ফিরতে পারবেন তিনি।
স্ট্রিক বাংলাদেশের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লিমিটেডের হয়ে খেলেছেন। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে ২০১৪ সালের মে মাসে বোলিং কোচ স্ট্রিককে নিয়োগ দেয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তখন বাংলাদেশের বোলিংয়ের উন্নতি ছিলনজর কাড়া। দুই বছরের মেয়াদ শেষে তাকে রাখতে চেয়েছিল বিসিবি। কিন্তু চুক্তি নবায়ন না করেই চলে যান।
স্ট্রিক বাংলাদেশ ছাড়াও কাজ করেন নিজ দেশ জিম্বাবুয়ের হয়ে। দলটিকে বিশ্বকাপে তুলতে ব্যর্থ হওয়ায় কোচের চাকরি হারাতে হয় তার। ২০১৮ সালে আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলিং কোচ হিসেবেও দ্বায়িত্ব পালন করেন। সরাসরি কয়েকটি সিরিজে স্ট্রিকের দুর্নীতির তথ্য দিয়েছে আইসিসি। এর মধ্যে আছে ২০১৮ সালের একটি ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট। যেখানে অংশ নেয় জিম্বাবুয়ে, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। আইপিএল ও ২০১৮ এপিএলে দলের ভেতরকার তথ্য পাচার করার অভিযোগ রয়েছে স্ট্রিকের বিরুদ্ধে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বুধবার হিথ স্ট্রিকের শাস্তির খবরটি নিশ্চিত করে আইসিসি।
স্ট্রিক জিম্বাবুয়ের সর্বকালের সেরা বোলারদের অন্যতম। ৬৫ টেস্ট খেলে নিয়েছেন ২১৬ উইকেট। ওয়ানডেতে ১৮৯ ম্যাচে নেন ২৩৯ উইকেট। ব্যাট হাতে রান প্রায় ৪ হাজার। ১টি টেস্ট সেঞ্চুরির পাশাপাশি আছে ২৪টি আন্তর্জাতিক ফিফটি। জিম্বাবুয়েকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ২১ টেস্ট ও ৬৮ ওয়ানডেতে।
কিন্তু এখন নিশ্চিত করেই সেই নিন্দিত ক্রিকেটারের তালিকায় যুক্ত হবে হিথ স্ট্রিকের নাম। তিনি যে নিষিদ্ধ এক ক্রিকেটার।
Discussion about this post