৫৫ মাস! সময়ের ক্যালেন্ডারে স্রেফ সংখ্যা-কিন্তু একটি দেশের ফুটবল প্রাণে সেটি এক বিরাট শূন্যতা। আজ সেই শূন্যতাকে পেছনে ফেলে, জাতীয় স্টেডিয়াম আবার গর্জে উঠেছে।
চোখে ধরা পড়ে উজ্জ্বল ফ্লাডলাইট, কানে বাজে গ্যালারির স্লোগান-আর মনে হয়, ফুটবল বুঝি ঘরে ফিরেছে। আজকের গল্পটা শুধু খেলার নয়… ফিরে আসার!
আজ ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিরল ফুটবলের প্রাণ। ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ২-০ গোলের জয়ে শুভ সূচনা করল বাংলাদেশ। ষষ্ঠ মিনিটেই কর্নার থেকে হেডে অভিষেকেই গোল করেন হামজা চৌধুরী। দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত দূরপাল্লার শটে গোল করেন সোহেল রানা।
মাঠে প্রথমবার খেলেছেন ইতালি প্রবাসী ফাহামিদুল, যার গতিময় খেলা বারবার ভুটান রক্ষণে ভীতি ছড়ায়। শেষ মুহূর্তে ইনজুরিতে সাদউদ্দিন মাঠ ছাড়লেও বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত ছিল। নতুন সাজে স্টেডিয়াম, গ্যালারিভর্তি দর্শক আর মাঠে ঝলক দেখানো ফুটবলে যেন শুরু হলো ফুটবলের এক নতুন ভোর।
বাংলাদেশ বনাম ভুটান—সাধারণ এক আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ বলে হয়তো কেউ ভেবে বসতে পারেন। কিন্তু আজকের ম্যাচটা ‘সাধারণ’ নয়। কারণ আজ মাঠে নেমেছেন এক নতুন বাংলাদেশ। যার জার্সিতে যুক্ত হয়েছে নতুন নাম—ফাহামিদুল ইসলাম। যার রক্তে রয়েছে ইতালির বাতাস, কিন্তু হৃদয়ে বাংলাদেশ। আজ তার জাতীয় দলের অভিষেক।
আরও এক নাম-হামজা চৌধুরী। ইংল্যান্ডে বেড়ে উঠলেও আজ দেশের মাটিতে প্রথমবার নামলেন লাল-সবুজের হয়ে। গ্যালারিতে তাঁর নাম ধরে গর্জে উঠেছে তরুণ দর্শক, যেন এক নতুন নায়ককে স্বাগত জানাচ্ছে জাতি।
পুরনো ভাঙাচোরা মাঠটা আজ নতুন সাজে রূপকথার মতো যেখানে আগে ছিল ধূলি আর জরাজীর্ণ চেয়ার, আজ সেখানে বসানো হয়েছে ঝকঝকে ধূসর ও সবুজ আসন। প্রথমবারের মতো ছাদ, ঘাসে ঘাসে নতুন জীবন, স্কোরবোর্ডে আধুনিকতার ছোঁয়া। এটি শুধু মাঠ নয়-এ যেন বাংলাদেশের ফুটবল আত্মার পুনর্জন্মস্থল।
১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ অপেক্ষায়, কিন্তু ভিত্তিটা রচিত হয়ে গেল আজ। নতুন উদ্যম পেয়ে গেল বাংলাদেশ ফুটবল!
Discussion about this post