হঠাৎ করেই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ল। খেলার ময়দান ছেড়ে সানিয়া মির্জা নামটা চলে গেল রাজনীতির ময়দানে! টেনিসের এই গ্ল্যামার গার্লকে তেলেঙ্গানা রাজ্যের শুভেচ্ছা দূত করার পরই শুরু বিতর্ক।
বিজেপির সাংসদ কে লক্ষ্মণ বলেন, ‘কার হাতে আপনারা রাজ্যের এমন দায়িত্ব তুলে দিলেন? এই সানিয়া তো পাকিস্তানের গৃহবধূ।’
এরপরই শুরু পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্কের ঝড়। ভারতীয় মেয়ে সানিয়ার পাকিস্তানি ক্রিকেটার শোয়েব মালিককে বিয়ে করার সেই পুরনো তর্কটা ফের চাঙ্গা হয়ে উঠে।
তাইতো এবার চোখের পানি ফেললেন সানিয়া। বললেন, ‘আপনারাই বলুন, আর কী করলে প্রমাণ হবে যে আমি একজন ভারতীয়।’
অবশ্য অনেকেই আছেন সানিয়ার পাশে। তারা বিজেপির নেতার এ মন্তব্যকে অভিহিত করেছে রাজনীতির ‘নোংরা খেলা’ বলছেন।
ভারতীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাতকারে সানিয়া বলছিলেন-‘এমপির এ মন্তব্য আমাকে আহত করেছে। এটা সত্যিই খুব দুর্ভাগ্যজনক যে, ভারতে জন্ম নিয়ে, ভারতে সারাটা জীবন কাটিয়েও আমাকে এখন প্রমাণ করতে হচ্ছে আমি আদৌ ভারতীয় কি না।’
পাকিস্তানি নাগরিক শোয়েব মালিককে বিয়ে করার পর থেকেই শুরু সমালোচনা। অনেকেই তখন থেকে বাঁকা চোখে দেখতে থাকেন সানিয়াকে। রাজনৈতিক ‘শত্রু’ পাকিস্তানের ‘বধূ’ হওয়ার ব্যাপারটি মেনে নেওয়া সহজ ছিল না ভারতীয় কট্টরপন্থীদের।
এ প্রসঙ্গে সানিয়া বললেন-‘সেই ছোটবেলা থেকেই পারিবারিকভাবে আমি জাতি, ধর্ম আর বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে ভাবতে শিখেছি। অন্য জাতি বা ধর্মের কারও সঙ্গে কথা বলা বা মেশার সময় এসব কখনই আমার মাথায় থাকে না। আর শোয়েবের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার সময়ও এসব ব্যাপার নিয়ে ভাবিনি।’
তবে যারা পাশে আছেন তাদের ধন্যবাদ জানালেন ২৭ বয়সী এই টেনিস তারকা-‘সত্যি বলতে কি, আমাদের দেশের ৮০ ভাগ মানুষই উদার। তারা এসব নিয়ে একেবারেই ভাবে না। তাদের ভালোবাসাই আমাকে মুগ্ধই করে।’
একইসঙ্গে বললেন ভারতীয় হিসেবেই আজীবন পরিচিত হতে চান তিনি। বললেন, ‘ভারতে রয়েছে আমার ও আমার পরিবারের শিকড়। আমৃত্যু একজন ভারতীয় হিসেবে নিজেকে পরিচিত করতে গর্ববোধ করব আমি।’
Discussion about this post