ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
টেস্ট ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার ব্যাট থেকে আসে ১০৩ রান। দিন শেষে গণমাধ্যমের সামনে জানান নিজের অনুভূতির কথা। মিরাজের সেই কথা তুলে ধরা হলো এখানে-
এক ভিডিও বার্তায় মিরাজ বলেন, ‘আমি যখন উইকেটে যায়, তখন একটু স্নায়ুচাপে ছিলাম। সাকিব ভাইয়ের সঙ্গে আমি কথা বলছিলাম যে, ভাই কী করলে ভালো হয়? সাকিব ভাই একটা কথা বলেছেন, নরমাল ক্রিকেট খেলতে এবং যদি আত্মবিশ্বাস থাকে, যে মারলে পার হয়ে যাবে বা যে শটই খেলি যেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলি।’
সাফল্যের রহস্য প্রসঙ্গে বলেন…
‘যেমন মাঝখানে হয়তো আমি নিজের প্রেশার রিলিজ করতে একটা স্লগ সুইপ চেষ্টা করব, তখন সাকিব ভাই আমাকে বলেন যে, এখানে স্লগ সুইপের চেয়ে প্যাডল সুইপ করলে ভালো। তখন আমার মাথায় চিন্তাটা কাজে লেগেছে যে, আমি যদি স্লগ সুইপের বদলে প্যাডল সুইপ খেলি তাহলে হয়তো ভালো হবে, আউট হওয়ার সুযোগ কম থাকবে।’
‘ব্যাটিংয়ে নামার আগে মুশফিক ভাই হয়তো দুই-একটা কথা বলেছে যে, এ উইকেটে অনেক সুযোগ আছে, ভালো কিছু যেমন ৭০ রানে নটআউট থাকতে পারবি। এ জিনিসগুলো যখন ড্রেসিংরুমে সিনিয়র প্লেয়াররা ব্যাকআপ করে জুনিয়রকে, তখন কিন্তু আমাদের বুক অনেক বড় হয়ে যায় এবং ভালো করতে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করা যায়।’
‘আমি যখন সেদিন নেটে ব্যাটিং করছিলাম, তখন তামিম ভাই আমাকে ২-১টা পরামর্শ দিচ্ছিলেন। তামিম ভাই সেদিন আমাকে একটা পরামর্শ দিয়েছেন, জোরে বলগুলো কীভাবে খেলতে হবে, শরীরের দিকে আসা বলগুলো কীভাবে খেলতে হবে। তামিম ভাই শুধু একটা কথা বলেছেন যে, শরীরের দিকে আসা বলগুলো সোজা রাখার জন্য, এটা যেন না ঘুরিয়ে দেই। আজকে এটা প্রয়োগ করেছি।’
ভয়ে ছিলেন মুস্তাফিজ
ইনিংসে মিরাজ যখন ৯২ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে, তখন নাঈম হাসান আউট। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে উইকেটে আসেন মুস্তাফিজ। তখন বেশি চিন্তায় ছিলেন মুস্তাফিজ। মিরাজ বলছিলেন, ‘মুস্তাফিজ আমাকে বলেছে যে, দোস্ত, আমার খুব ভয় লাগছিল তোর টেনশনে যে, তোর ৯০ হয়ে গেছে, ওখানে যদি আমি আউট হয়ে যাই! কিন্তু আমি ওরে একটা কথাই বলেছি, দোস্ত এটা তোর হাতেও না, আমার হাতেও না। তুই তোর নরমাল ক্রিকেট খেল। যদি আমার কপালে থাকে, আল্লাহ্ যদি আমার ওপর রহম করে তাহলে ১০০ হবে।’
‘আমি যখন শুরু করেছি (আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার), তখন আমি হয়তো ভালো ব্যাটিং করতে পারছিলাম না। বাট আমি আস্তে আস্তে চেষ্টা করেছি নিজের উন্নতি করার জন্য। আমি মনে করি, গত কয়েকদিনে যা কাজ করেছি, তা অনেক ভালো হয়েছে। সেটার জন্য হয়তো আজকের ব্যাটিংটা ভালো হয়েছে। আল্লাহ্র রহমতে রান পেয়েছি।’
আত্মবিশ্বাস বেড়েছে…
‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক অনেক টাফ। আল্লাহর রহমতে আজকে হয়তো ভালো হয়েছে, ভবিষ্যতে ভালো ও খারাপ সময় যাবে। টিম কম্বিনেশনের জন্য অনেক কিছু হতে পারে। সবার আগে দল প্রথম। আমি হয়তো আজকে ১০০ করেছি, পরের দিন রান নাও করতে পারি। উইকেট পেতে পারি, নাও পেতে পারি। এগুলো জীবনের অংশ।’
‘এখন অবশ্যই নিজের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। অনেকদিন ধরে রান পাচ্ছিলাম না। নিজেও হতাশ ছিলাম। বিগত কিছুদিন নিজেও কাজ করেছি। ভালো ব্যাটিং হয়েছে। তবে যেটা বললেন নাঈম, নাঈম ভালো অফ স্পিনার। আমিও খেলছি। এটা হয়তো টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। তারা যেটা ভালো মনে করেছেন, সেটাই ভবিষ্যতে করবেন এবং এখনো করছেন।’
‘আমার নিজের জন্য অনেক বড় একটা পাওয়া। আমি নিজে খুব একটা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না। কিন্তু এখন আমার মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে যে, যদি আমি ব্যাটিং নিয়ে আরো পরিশ্রম করি, কাজ করি, তাহলে অবশ্যই ভালো অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব। আমার কথা হল যেহেতু আমার সুযোগ আছে, তাহলে কেন আমি সেই সুযোগ কাজে লাগাব না।’
Discussion about this post