ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
হারলেই বিদায়। এমন এক সমীকরণের ম্যাচে বৃহস্পতিবার ব্যাট-বল হাতে জ্বলে উঠলেন সাকিব আল হাসান। যে কারণে বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি পাপুয়া নিউ গিনি। শেষ পর্যন্ত তাই লাল-সবুজ প্রতিনিধিরা বড় জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে বৃহস্পতিবার পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে ৮৪ রানে। এরআগে ওমানের আল আমেরাত স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮১ রান করে বাংলাদেশ। সাকিব ৩৭ বলে ৪৬ ও মাহমুদউল্লাহ ২৮ বলে ৫০ রান করেন। এছাড়া ২৩ বলে ২৯ রান করেন লিটন। শেষ দিকে ৬ বলে ১৯ রান করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। পরে বল হাতে সাকিবের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে (৯ রানে ৪ উইকেট) পাপুয়া নিউ গিনিকে ১৯.৩ ওভারে ৯৭ রানে গুটিয়ে দেয় টিম টাইগার্স। যে কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে উঠে গেল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
বল হাতে শুরু থেকেই দাপটে দেখায় টাইগাররা। প্রতিপক্ষ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। সে সময় পাপুয়া নিউ গিনির রান ১১। দলীয় ১৩ রানে অধিনায়ক আসাদ ভালাকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। এরপর টানা তিনটি উইকেট শিকার করেন সাকিব।
শেখ মেহেদী হাসান ২৪ রানেই পাপুয়া নিউগিনির ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটান। এরপর কিপলিন দরিগার প্রচেষ্টায় একশর কাছাকাছি পৌঁছায় দলটি। শেষপর্যন্ত ১৯.৩ ওভারে ৯৭ রানে অলআউট হয় পাপুয়া নিউগিনি।
পাপুয়া নিউ গিনির হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন দরিগা। বাংলাদেশের হয়ে সাকিব চারটি, তাসকিন ও সাইফউদ্দিন দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
এরআগে বৃহস্পতিবার ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা লাগে বাংলাদেশ শিবিরে। দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলে স্কোর বোর্ডে কোনো রান তোলার আগেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নাঈম শেখ বিদায় নেন শুন্য রানে। এর প্রতিরোধের দায়িত্ব নেন আরেক ওপেনার লিটন দাস ও সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে গড়েন ৫০ রানের পার্টনারশিপ। পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ পায় ৪৫ রান। ২৩ বলে ২৯ রান করে লিটন বিদায় নিলে ভাঙে এই জুটি। লিটন এদিন হাঁকান একটি করে চার-ছক্কা।
আগের ম্যাচে আট নম্বরে নামা মুশফিকুর রহিম এই ম্যাচে নেমেছিলেন চার নম্বরে। তবে যথারীতি ব্যর্থ ছিলেন। ৮ বলে ৫ রান করে তিনি বিদায় নেন তিনি।
মুশফিক ফিরলেও ঝড় তোলেন রিয়াদ। তার সঙ্গে দারুণ জুটি গড়েন সাকিব। শেষ পর্যন্ত ৩টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৪৬ রান করেন এই অলরাউন্ডার। তার বিদায়ের পর ক্রিজে এসে রান বাড়ানোর দায়িত্ব নেন আফিফ হোসেন ধ্রুব।
পাপুয়া নিউগিনির বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে ২৮ বলের মোকাবেলায় ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ অর্ধশতক পূর্ণ করেন রিয়াদ, হাঁকান ৩টি করে চার-ছক্কা। আশরাফুলের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েই অবশ্য সাজঘরে ফিরতে হয় ২৭ বলে অর্ধশতক হাঁকানো রিয়াদকে।
শেষদিকে সাজঘরে ফেরা আফিফ ১৪ বলে ২১ রান করেন, তিনটি চারের সহায়তায়। তবে ঝড় তোলেন সাইফউদ্দিন। ৬ বলে ১৯ রান করেন তিনি (একটি চার ও ২টি ছক্কা)। শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮১ রান।
পাপুয়া নিউগিনির হয়ে কাবুয়া মরেয়া, ডেমিয়েন রাভু ও অধিনায়ক আসাদ ভালা দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ:
২০ ওভারে ১৮১/৭ (নাঈম ০, লিটন ২৯, সাকিব ৪৬, মুশফিক ৫, মাহমুদউল্লাহ ৫০, আফিফ ২১, সোহান ০, সাইফ ১৯*, মেহেদি ২*; মোরেয়া ৪-০-২৬-২, রাভু ৪-০-৪০-২, সোপের ৪-০-৫৩-০, বাউ ২-০-২০-০, ভালা ৩-০-২৬-২, আমিনি ২-০-৯-০, আটাই ১-০-৬-১)।
পাপুয়া নিউ গিনি:
১৯.৩ ওভারে ৯৭ (সিয়াকা ৫, ভালা ৬, আমিনি ১, বাউ ৭, আটাই ০, হিরি ৮, ভানুয়া ০, ডরিগা ৪৬*, সোপের ১১, মোরেয়া ৩, রাভু ৫; সাইফ ৪-০-২১-২, মোস্তাফিজ ৪-০-৩৪-০, তাসকিন ৩.৩-১-১২-২, সাকিব ৪-০-৯-৪, মেহেদি ৪-০-২০-১)।
ম্যাচসেরা: সাকিব আল হাসান
Discussion about this post