এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেলে যে মাঠের খেলায় মনোযোগ রাখা যায় না, সেটা ভাল করেই জানেন তিনি। পেশাদারি ক্যারিয়ারে নিজেও এসব সামাল দিয়েছেন। এ কারণেই সাকিব আল হাসানকে স্যালুট দিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। সন্তানসহ পরিবারের একাধিক সদস্য যখন হাসপাতালে ভর্তি তখন কীনা দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ দলের সঙ্গে থেকে গিয়ে খেলে এসেছেন ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ।
রোববার মিরপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা সম্মান জানালেন সাকিবকে। চলতি প্রিমিয়ার লিগে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জে খেলা এই তারকা ক্রিকেটার বলেন, ‘আমার মতে, সাকিবের এখানে (দক্ষিণ আফ্রিকায়) আসা ও খেলা অনেক বড় বিষয় ছিল। বিশেষ করে ওর দুই মেয়ে, মা এবং শাশুড়ি হাসপাতালে ভর্তি। তবু সে দেশের হয়ে খেলছে। এটিই ওর ক্যারেক্টার প্রমাণ করে। ও সিরিজটি জিততে চেয়েছিল। আমি ওকে অনেক ধন্যবাদ জানাই। পুরো সিরিজে ও দুর্দান্ত ছিল।’
মাশরাফি আরও যোগ করেন, ‘সাকিবের যেটা হয়েছে, বাসার ৪-৫ জন অসুস্থ ছিল। আমাদের অবশ্যই সাকিবের ত্যাগটা দেখতে হবে। সে চাইলে চলে আসতে পারতো। সে থেকে গিয়ে দলকে সাপোর্ট দিয়েছে। এটা অবিশ্বাস্য, কারণ এক-দু্ইজন না, সবাই অসুস্থ ছিল।সবচেয়ে বড় ব্যাপার সে সিরিজটা জিততে চেয়েছিল। এটা কিছুটা স্বার্থপরের মতো বলা হয়ে যাবে, আমার দৃষ্টিকোণ থেকে। কারণ দিন শেষে তার পরিবারের সবাই অসুস্থ ছিল। দিন শেষে এটা সাকিবের সিদ্ধান্ত ছিল। সাকিব দুই দিক সামলে দারুণভাবে নিতে পেরেছে, এটা আমি মনে করি হ্যাটস অফ টু সাকিব।’
অসুস্থ হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি সাকিবের মা শিরিন আক্তার। একমাত্র ছেলে আইজাহ আল হাসান ও মেঝো মেয়ে ইরাম হাসান নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত ছিলেন। ড় মেয়ে আলাইনা হাসান অব্রি ঠান্ডা জ্বরে ভুগছিলেন। সাকিবের শ্বাশুড়ি ক্যান্সারে আক্রান্ত। তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি।
অবশ্য সিরিজ শেষে দেশে ফিরে এসেছেন সাকিব আল হাসান। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট মিস করতে পারেন। তবে দেখা যেতে পারে সফরের দ্বিতীয় টেস্টে।
এদিকে ক্রিকেটারদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া সবসময় বিপদজনক। যেকোনো মানুষের জন্যই, আর খেলোয়াড়দের জন্য তো অবশ্যই। সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই রকমের কথা আসে। এমন না এটা ভুল জায়গা। তবে কোন কথা কীভাবে প্রভাব রাখছে সেটা খেলোয়াড়দের বুঝতে হবে। খেলোয়াড় যদি সবকিছু সামলাতে পারে তাহলে তো ভালোই। না পারলে বুঝতে হবে এখানে থাকা উচিৎ কি না। যে সোশ্যাল মিডিয়ায় যত থাকবে সে তত চাপ নিবে। ভালো খেললে মানুষ ভালো কথা বলবে, খারাপ খেললে সমালোচনা করবে এটাই স্বাভাবিক। ঐ খেলোয়াড় কীভাবে নিচ্ছে বিষয়টিকে এটার ওপর নির্ভর করে। আমার মনে হয় খেলোয়াড়রা সবাই পরিণত। তারা জানে দক্ষিণ আফ্রিকায় কাজটা সহজ ছিল না আর সামনের সিরিজও সহজ হবে না। প্রত্যাশা থাকবেই। নিজেকে সেভাবে তৈরি করতে হবে- আমার চলাফেরা বা কথাবার্তা যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমি যেন প্রত্যাশার বাইরে চলে না যাই।’
Discussion about this post