ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন দুজন-মাইক হেসন ও রাসেল ডোমিঙ্গো। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) রহস্য জমিয়ে রেখেছিল। তবে সব আলোচনার ইতি টেনে নতুন কোচ হিসেবে রাসেল ডমিঙ্গোকেই নির্বাচন করেছে বিসিবি। শনিবার সংবাদ সম্মেলনে নতুন কোচের নাম জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। দক্ষিণ আফ্রিকান এই কোচের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে দুই বছরের।
তারপরই প্রশ্ন জাগছে কেমন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো?
চলুন সেই প্রশ্নের উত্তর খোজার আগে চলুন জেনে নেই কেন বিসিবির পছন্দ করল তাকে। ডমিঙ্গো ২০২০ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ আর ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপকে লক্ষ্য রেখে পরিকল্পনা দেন বিসিবিতে। কোচিংয়ের বেশ অভিজ্ঞ ডমিঙ্গো। দক্ষিণ আফ্রিকার অনূর্ধ্ব-১৩, অনূর্ধ্ব-১৯ , বি দল ও এ দলের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। একইসঙ্গে ২০০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া দল ওয়ারিয়র্স কোচ ছিলেন তিনি। সহকারী কোচ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি দলের হেড কোচও হন ডমিঙ্গো। তারপর তিন সংস্করণেই দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান কোচ হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালে সেই দ্বায়িত্ব ছাড়েন ডমিঙ্গো।
অবশ্য বড় পর্যায়ে ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা নেই তার। ক্রিকেটারের যে বয়সে ক্যারিয়ার শুরু হয়, ঠিক সে বয়সেই খেলা ছেড়ে বেছে নেন কোচিং পেশা। ডমিঙ্গোর জন্ম পোর্ট এলিজাবেথে ১৯৭৪ সালে। ইস্টার্ন প্রভিন্সের বয়সভিত্তিক দলে খেলার সময় বুঝতে পারেন ফেলেন, ক্রিকেট খেলে বেশিদূর যেতে পারবেন না। এ কারণেই খেলা ছেড়ে দ্রুতই নাম লেখা কোচিংয়ে। খেলোয়াড়ি জীবনে খেলেছেন দ্বিতীয় সারির লিগে। এরপর খেলা ছেড়ে অর্জন করলেন স্পোর্টস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং মার্কেটিংয়ের ওপর ডিগ্রি। মজার ব্যাপার হলো- মাত্র ২৫ বছর বয়সেই দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন প্রভিন্স যুব দলের কোচের দায়িত্ব পান তিনি।
২০১১ বিশ্বকাপ জিতিয়ে ভারত থেকে বিদায় নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ হয়েছিলেন গ্যারি কারস্টেন। এরপর সহকারী হিসেবে নেন ডমিঙ্গোকে। এক বছরের মাথায় সহকারী কোচ থেকে টি-টুয়েন্টি দলের হেড কোচ হয়েছিলেন ডমিঙ্গো। ২০১৩ সালে গ্যারি কারস্টেনের বিদায়ের পর তিন সংস্করণেই প্রধান কোচের দায়িত্ব পান তিনি।
তার অধীনে ১৩ টেস্ট সিরিজের ৮টিতে জয়ী হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে সাতে নেমে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে যান দুইয়ে। তার অধীনে ২২ ওয়ানডে সিরিজের ১৪টিতে জিতে ওয়ানডেতে শীর্ষ দল হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপের নকআউট ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র জয়টি আসে তাঁর সময়েই। টি-টোয়েন্টিতে ৪২ ম্যাচের মধ্যে ২৩ জয় পেয়েছেন। ২০১৫ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে আগামী ২১ আগস্ট ঢাকায় আসবেন নতুন হেড কোচ। সেদিনই কাজ শুরু করতে চান ডমিঙ্গো। বেশিসময় ধরে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে থাকতে পারবেন এ বিবেচনায় ডোমিঙ্গোকে বেছে নিয়েছে বিসিবি।
প্রধান কোচ ডমিঙ্গোকে দিয়ে বাংলাদেশের কোচিং স্টাফের প্রায় সবাই এখন দক্ষিণ আফ্রিকান। ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি ও ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক। কিছুদিন আগে নতুন বোলিং কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার চার্লস ল্যাঙ্গাভেল্ট। স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি ড্যানিয়েল ভেট্টোরি।
দক্ষিণ আফ্রিকার এই চারজনের বাইরে সাপোর্ট স্টাফে আছেন ট্রেনার শ্রীলঙ্কার মারিও ভিল্লাভারায়ন ও পারফরম্যান্স অ্যানালিস্ট ভারতের শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখর।
Discussion about this post