ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
মনে দুঃখ নিয়েই মঙ্গলবার বাংলাদেশে ফিরবেন তামিম ইকবাল। কবজির চোট শেষ করে দিয়েছে তার এশিয়া কাপ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) একটি সুত্র অবশ্য এরইমধ্যে জানিয়ে দুই থেকে তিন সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে এই ব্যাটসম্যানকে। কারণ আপাতত অস্ত্রোপচার করাতে হচ্ছে না।
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুরাঙ্গা লাকমলের বলে বাঁ হাতের কবজিতে চোট পান তামিম। মাঠ থেকেই দুবাইয়ের স্থানীয় এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এই ব্যাটসম্যানকে। এক্সরের পর জানা যায় কবজিতে চিড়। শেষ হয়ে যায় তার এশিয়া কাপ। তবে সাহসী তামিম শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটাতে হাতে ব্যান্ডেজ নিয়ে মাঠে নামেন। দেশের জন্য ঝুঁকি নিতেও পিছপা হননি তিনি।
এ অবস্থায় মন খারাপ তামিমের। ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে মনটা প্রচণ্ড খারাপ। কতটা, তা বুঝিয়ে বলতে পারব না। আমার অনেক আশা ছিল এই টুর্নামেন্ট নিয়ে। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য অসাধারণ। সেটাও না হয় বাদ দিন। আমি এত ভালো অবস্থায় ছিলাম, এখানে এত বড় একটা ইভেন্ট খেলতে এলাম! কিন্তু কিছুই করা হলো না!’
তামিম জানালেন কে তাকে ভাঙা কবজি নিয়ে মাঠে নামতে বলেছিলেন। সেই রহস্য নিয়ে তিনি জানান, ‘যদি মোস্তাফিজ আউট হয়ে যায় আর মুশফিক উইকেটে থাকে, তাহলে তুই আবার যাস। ঝুঁকি নেওয়ার দরকার নেই। মুশফিক যদি স্ট্রাইকে থাকে, আর তুই ননস্ট্রাইকে থাকিস, তাহলেই যাস।’
যদিও প্রথমে ব্যাপারটি তার কাছে দুষ্টুমির মনে হয়েছিল। কিন্তু পরে তিনি নিজের বুঝলেন সত্যিই। তবে মাশরাফি চাইছিলেন না এ বাঁহাতি আবার ব্যাটিংয়ে নামুক। কিন্তু রুবেল আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তামিম মনস্থির করে ফেলেন ২২ গজে নামবেন। বলেন, ‘আমি প্যাড পরতে শুরু করলাম। মুমিনুল প্যাড করতে সাহায্য করল। মাশরাফি ভাই এসে আমার গ্লাভস কেটে আঙুল বের করে দিতে সাহায্য করলেন (দুই আঙুলে মোটা ব্যান্ডেজ ছিল)। জীবনে প্রথমবার অন্য কেউ আমার অ্যাবডোমেন গার্ড পরিয়ে দিল। সবাই সাহায্য করছিল আমাকে।’
১১ নম্বর ব্যাটসম্যান মোস্তাফিজ আউট হতেই তামিম সবাইকে অবাক করে কাটা গ্লাভস হাতে পরে ব্যাটিংয়ে নেমে পড়েন। এনিয়ে তিনি বলছিলেন, ‘মাঠে নামার সময়টা যখন এল, তখনো সবাই যেন বুঝতে পারছিল না কী হতে চলেছে। কিন্তু আমি আর কিছু না ভেবে সোজা মাঠে নেমে পড়লাম। কেউ একজন বলল, আমি কি সব ভেবেচিন্তেই নামছি? বললাম, আমি নিশ্চিত। তখন মনে হচ্ছিল, আমার ভাগ্যে যদি এবারের এশিয়া কাপে আর একটি বল খেলাই থাকে, তবে তা-ই হোক। একটা বলই কেন নয়? তখন মনে হয়েছিল, আমার কারণে যদি ১০টা রানও যোগ হয়, এটাও অনেক। কেউ ভাবেনি আমি ওই একটা বলই খেলতে পারব, আর শেষে ৩২ রান যোগ হবে। মুশফিক যেভাবে ব্যাট করল, তা এক কথায় অবিশ্বাস্য।’
Discussion about this post