এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার মাঠজুড়ে ছিল জয়ের আনন্দ। কিন্তু ম্যাচ শেষে শোকের কালো ছায়া নেমে এলো লঙ্কান শিবিরে। দলের তরুণ বাঁহাতি স্পিনার দুনিথ ভেল্লালাগে জানতে পারলেন, খেলা চলাকালেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তার বাবা, সুরাঙ্গা ভেল্লালাগে।
ভেল্লালাগের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের দিনটা ছিল হতাশাজনক। শেষ ওভারে মোহাম্মদ নবীর ঝড়ে খরচ করেন ৩২ রান। ম্যাচ শেষে দল জয় পেলেও তার নিজের মধ্যে রয়ে গেল তীব্র হতাশা। এর ঠিক পরেই এসে পৌঁছায় জীবনের সবচেয়ে কঠিন সংবাদ-বাবার মৃত্যু। যে মানুষ নিজেও ছিলেন ক্রিকেটার, ছেলেকে গড়ে তুলেছেন মাঠের জন্য, তাঁর বিদায়ে মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে যান দুনিথ।
বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা দ্রুত শোক প্রকাশ করেছেন এই তরুণ স্পিনারের প্রতি। তাসকিন আহমেদ লিখেছেন, ‘দুনিথ ভেল্লালাগের পরিবারের জন্য আমার আন্তরিক প্রার্থনা।’ লিটন দাস জানিয়েছেন, “তোমার বাবার মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে দুঃখিত। তিনি ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার। আল্লাহ তাকে শান্তি দিন।’ তরুণ ব্যাটার তাওহীদ হৃদয় লিখেছেন, ‘এই কঠিন সময়ে আমার চিন্তা ও প্রার্থনা থাকবে দুনিথ ভেল্লালাগের সঙ্গে।’
মাঠে প্রতিপক্ষ হলেও ভেল্লালাগের শোকে নীরব হয়ে পড়েছিলেন আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবীও। শেষ ওভারে তিনি ভেল্লালাগেকে টানা পাঁচ ছক্কা মেরেছিলেন। খেলার পরে জানতে পারেন তাঁর প্রতিপক্ষের বাবার মৃত্যুর খবর। হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে অস্ফুট কণ্ঠে তিনি বলেছিলেন শুধু একটি শব্দ-‘সরি।’
শ্রীলঙ্কা জিতে নিয়েছে ম্যাচ, নিশ্চিত করেছে সুপার ফোর। কিন্তু ভেল্লালাগের জন্য দিনটি থেকে গেল দুঃখের স্মৃতি হয়ে। জয়-পরাজয়ের হিসাব পেছনে পড়ে গেল, সামনে ভেসে উঠল শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতির যন্ত্রণা। ক্রিকেট আবারও মনে করিয়ে দিল, মাঠের সীমানার বাইরেও খেলোয়াড়রা আমাদের মতোই মানুষ-যাদের আনন্দ, বেদনা আর অশ্রু মিলেমিশে যায় জীবনের খেলায়।
Discussion about this post