আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতের যাত্রাটা শুরু হয় অনেকটা নিঃশব্দে। তবে এলিট প্যানেলে জায়গা পাওয়ার পর তার প্রতিটি সিদ্ধান্ত, প্রতিটি ম্যাচ এখন বিশ্ব ক্রিকেটে আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষ করে ভারতের ম্যাচে তাঁর আম্পায়ারিং মানেই বাড়তি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু, কখনও প্রশংসা, কখনও সমালোচনার ঝড়।
আগামী ২ জুলাই থেকে এজবাস্টনে শুরু হতে যাওয়া ইংল্যান্ড–ভারত টেস্ট এবং ১০ জুলাইয়ের লর্ডস টেস্টে মাঠের আম্পায়ার থাকছেন শরফুদ্দৌলা। এর আগেই হেডিংলিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে টিভি আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এখন প্রশ্ন আগের বিতর্ক ও সাহসী সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে শরফুদ্দৌলার এই নিয়োগ কি আবারও জন্ম দেবে নতুন কোনো আলোচনা?
গত বছরের বক্সিং ডে টেস্টের কথা এখনও ভুলে যায়নি কেউ। প্যাট কামিন্সের আবেদন নাকচ করে মোহাম্মদ সিরাজকে নটআউট ঘোষণা কিংবা স্নিকোমিটারে স্পষ্ট তরঙ্গ না দেখেও যশস্বী জয়সোয়ালকে আউট দেওয়ার ঘটনায় উঠে আসে তার নাম। প্রযুক্তি যেখানে অনিশ্চিত, সেখানে আম্পায়ারের পর্যবেক্ষণ আর ক্রিকেটীয় বোধ দিয়েই তিনি নিয়েছিলেন কঠিন সিদ্ধান্ত-যা একদিকে সাহসের উদাহরণ, আবার অন্যদিকে প্রশ্নের জন্ম দেয়।
এরপর সিডনির উত্তপ্ত মাঠে দায়িত্ব পালনে দেখা যায় তাঁর ভারসাম্যপূর্ণ ভূমিকা। স্যাম কনস্টাস, বুমরা ও কোহলির মাঝে তৈরি হওয়া উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ঠাণ্ডা রাখতে শরফুদ্দৌলার হস্তক্ষেপ ছিল অত্যন্ত সময়োচিত। পাশাপাশি ওয়াশিংটন সুন্দরকে আউট না দিয়ে রিভিউর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত বদলের ঘটনায় আবারও উঠে আসে প্রযুক্তির নির্ভরযোগ্যতা বনাম মাঠের সিদ্ধান্তের বিতর্ক।
তবে শরফুদ্দৌলার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় দিক, তাঁর সিদ্ধান্তের পেছনে থাকে যুক্তি ও আত্মবিশ্বাস। হার্শা ভোগলে, সাইমন টফেল থেকে শুরু করে রোহিত শর্মা, রবি শাস্ত্রী বা মাইকেল ভন-সবার প্রশংসা কুড়িয়েছেন এই বাংলাদেশি। এবার সেই শরফুদ্দৌলা আবার ভারতের ম্যাচে। বুমরা, জয়সোয়াল, সুন্দর-তারা সবাই থাকছেন এই সিরিজেও। ছয় মাস আগের ঘটনার ছায়া কি ফের পড়বে লর্ডস বা এজবাস্টনে? মাঠে আবার কি শুনতে পাওয়া যাবে উত্তেজিত বিড়বিড়, কিংবা রিভিউর পর ভ্রু কুঁচকানো চোখ?
Discussion about this post