বাংলাদেশের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। অনেকেই বলছেন নতুন করে স্বাধীন হলো এই দেশ। অনেকটা তাই। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা সরকার এখন আর নেই। খোদ শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন। তারই প্রভাব এবার পড়ল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও (বিসিবি)। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন উত্তাল মিরপুরের কার্যালয়!
মঙ্গলবার সকালেই বিসিবিতে আসতে থাকেন এতদিন ধরে উপেক্ষিত, কোণঠাসা হয়ে থাকা বিরোধী দলের ক্রীড়া সংগঠকরা। বেলা বাড়তেই সরগরম চারপাশ। নেতৃত্বে ছিলেন বিসিবির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবু।
বিসিবির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বে সেখানে ছিলেন ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ক্রিকেটার দেবব্রত পাল, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ, মোহামেডানের কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম, প্রাইম দোলেশ্বরের যুগ্ম-সম্পাদক মুশতাক হোসেন, পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন, জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন, বিসিবির সাবেক দুই কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান ও বোরহান উদ্দিনসহ অনেকে।
জাতীয় দলের ক্রিকেটার নুরুল হাসান সোহান ও মুমিনুল হকও এদিন ছিলেন বিসিবিতে।
সবারই দাবি বিসিবি চলে একচ্ছত্র ক্ষমতায়। এখানে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে। যেখানে কোনো ক্রীড়া সংগঠক নেই, তারা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বোর্ড চালানোর জন্য সংকেত দিয়ে গেছেন। গণমাধ্যমে ক্রীড়া সংগঠক টিটু বলেন, ‘আপনারা জানেন এটা স্বৈরাচারি সরকারের পতন হয়েছে। এখন দেশে কোনো প্রধানমন্ত্রী নেই, হয়তোবা এক দুদিনের মধ্যে দেশে একটা সরকার গঠন হবে। তার আগে আমরা আসলে কোনো কিছু করতে চাচ্ছি না। আমরা রাজনৈতিক মুখ না, আমরা স্পোর্টস অর্গানাইজার। এখানে যারা আছি, সবাই স্পোর্টসের সঙ্গে ছিলাম। আপনারা দেখেছেন, এর আগে যারা এখানে কাজ করেছে, একটা স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী নিয়ে ক্রিকেট বোর্ড পরিচালিত হয়েছে। ক্রিকেটের কোনো অর্গানাইজার ছিল না।’
তরিকুল ইসলাম টিটু আরও বলেন, ‘আমরা যখন ছিলাম, আমরা চেয়েছিলাম আমরা চেষ্টা করেছি সমস্ত অর্গাইনাইজারদের এখানে। এখন বোর্ড যেভাবে আছে, সেভাবেই চলবে। আমরা আসার আগে প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম, কিন্তু উনি আসেননি। কেন আসেননি, জানি না। আমরা এখন বর্তমান যে সফরগুলো আছে ওগুলো চলমান থাকবে, যেহেতু সরকার নেই বোর্ড কেউ নেই। এখন স্টাফ যারা আছে, তাদের দায়িত্ব দিয়েছি, তারা এখন বোর্ডটা পরিচালনা করবে। যতটুকু করার দরকার, তার চেয়ে বেশি করবে না। পরবর্তীতে সরকার গঠন হলে আমরা একটা চিন্তা করব।’
আজ সরব উপস্থিতি ছিল সাবেক প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও হাবিবুল বাশার সুমনও। নান্নু বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় আমাদের ক্রিকেটটাকে চলমান রাখতে হবে। আমাদের যে দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলো আছে, এ টিমের সফর আছে, সামনে পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজ আছে।’
হাবিবুল বাশার বলেন, ‘আমাদের সামনে খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়। আমাদের খেলা আছে, বিশ্বকাপ আছে, জাতীয় দলের সফর আছে, আশা করছি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। নতুন ভালো কিছুর স্বপ্ন দেখছি আমরা।’
Discussion about this post