বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দরজায় নতুন হাওয়া বইছে। সভাপতি ছাড়া প্রায় সব পদেই এসেছে পরিবর্তন, যোগ হয়েছে নতুন মুখ, ফিরেছেন পুরোনো অভিজ্ঞরাও। ৬ অক্টোবরের নির্বাচনের পর বিসিবির নেতৃত্বে আবারও এসেছেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
তার সঙ্গে বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন ফারুক আহমেদ, খালেদ মাসুদ পাইলট ও আবদুর রাজ্জাকের মতো প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। আর এই নবগঠিত পর্ষদের এক অভিনব সংযোজন সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর-যিনি এবার ক্রিকেট প্রশাসনের নতুন ভূমিকায়।
১২ বছর ধরে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব পালন শেষে গত বছর পদত্যাগ করেন নাজমুল হাসান পাপন। এরপরের সময়টা ছিল অস্থিরতা ও নেতৃত্ব পরিবর্তনের। ২০২৪ সালের আগস্টে সভাপতি হন ফারুক আহমেদ, কিন্তু এ বছরের মে মাসে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন বুলবুল। সর্বশেষ নির্বাচনের পরও তিনিই দায়িত্বে আছেন, সহসভাপতি হয়েছেন ফারুক ও মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। এই পরিবর্তনের মধ্যেই বিসিবিতে পরিচালক হিসেবে যুক্ত হয়েছেন গায়ক আসিফ আকবর। তাঁর হাতে এখন দেশের বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের দায়িত্ব।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে মিরপুরে বিসিবি কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন আসিফ। দীর্ঘ ২২ বছর পর প্রিয় মাঠে ফিরে স্মৃতিময় হয়ে উঠলেন তিনি। হাসিমুখে বললেন, ‘আমি ভাগ্যবান যে বুলবুল ভাইয়ের সঙ্গে খেলেছি, ছোটবেলা থেকেই তাঁকে দেখেছি মাঠে। নান্নু ভাই, ফারুক ভাইরা আমাদের অনুপ্রেরণা ছিলেন। আজ তাদের সঙ্গে এক বোর্ডে কাজ করতে পারব-এটা আমার জন্য গর্বের।’
তবে আসিফের দৃষ্টি শুধু স্মৃতিতে নয়, ভবিষ্যতের প্রতিও। সাবেক ক্রিকেটারদের বিসিবিতে আগমনকে তিনি দেশের ক্রিকেটের জন্য আশার বার্তা হিসেবেই দেখছেন, ‘এখন বোর্ডে ক্রিকেটাররা এসেছে-রাজ্জাক, পাইলট ভাই আছে। ট্যাকটিকাল দিকগুলো উন্নত হবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে বের হয়ে ক্রিকেটাররা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, এটা দারুণ পরিবর্তন। সংগঠক ও খেলোয়াড়দের সমন্বয় হলে ক্রিকেটে নতুন জোয়ার আসবে।’
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের দায়িত্ব পাওয়া প্রসঙ্গে আসিফের চোখে ঝিলিক দেখা গেল। তরুণ প্রজন্মের প্রতি তার অনুরাগ লুকোনো নয়। বললেন, ‘বাচ্চাদের সঙ্গে কাজ করা মানেই ভবিষ্যতের সঙ্গে কাজ করা। আমার গানের ক্যারিয়ারেও দেখবেন, সব সময় তরুণ শিল্পী ও পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছি। সেটা আমাকে তারুণ্য দিয়েছে। ক্রিকেটেও তরুণদের নিয়েই আমি কাজ করতে চাই।’
ভারতের ক্রিকেট কাঠামোর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘ভারতের পাইপলাইন এত শক্তিশালী যে এক জায়গার জন্য চার-পাঁচজন ক্রিকেটার প্রস্তুত থাকে। আমাদেরও সেই জায়গায় পৌঁছাতে হবে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট সেই ভিত্তিই তৈরি করে দেয়। এক জায়গায় মাত্র একজন নয়, চার-পাঁচজন প্রস্তুত থাকলে প্রতিযোগিতা বাড়বে, পারফরম্যান্সও উন্নত হবে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে দেখা যাচ্ছে ধারাবাহিকতা ও বিকল্প খেলোয়াড় তৈরির ঘাটতি। সেই জায়গাতেই আসিফ আকবর কাজ করতে চান সবচেয়ে বেশি, ‘বাচ্চারাই দেশের ভবিষ্যৎ। বয়সভিত্তিক পর্যায়ে যারা কাজ করেন, তাঁরাই আগামী প্রজন্ম গড়ে তোলেন। ভালো একটা দায়িত্ব পেয়েছি-চেষ্টা করব সেটা যথাযথভাবে পালন করতে।’
 
			 
                                









Discussion about this post