আগের দিনই খবরটা নিশ্চিত করেছিলেন সাবিনা আকরাম। জানিয়েছিলেন, জাতীয় ক্রিকেট দলের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে আর থাকছেন না আকরাম খান। শেষ অব্দি স্ত্রীর কথারই সত্যতা মিলল। তবে ঘটনা সত্যি হলেও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।
রাজধানীর বনানীতে নিজের বাসায় মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আকরাম জানিয়ে রাখলেন, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের সঙ্গে আলোচনার পর পদত্যাগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন তিনি। পারিবারিক আলোচনায় এমন সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে।
গণমাধ্যমের সামনে আকরাম খান বলেন, ‘আসলে আমি আজ কথা বলতে চাইনি। আপনারা যেহেতু চলে এসেছেন, কিছু তো বলতেই হবে। আমরা পারিবারিকভাবে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার ব্যাপারে। যেহেতু আমি আট বছর ক্রিকেট অপারেশন্সে ছিলাম। এটা নিয়ে আমাদের মাননীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট আমার যিনি অভিভাবক, গত আট বছরে তার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য পেয়েছি কাজের জন্য। যতগুলো খারাপ-ভালো সময় গেছে, সব সময় উনি আমার সঙ্গেই ছিলেন। তো তার সঙ্গে আলাপ করে হয়তো কালকের মধ্যে আমার সিদ্ধান্তটা জানিয়ে দিব।’
এখানেই শেষ নয়, আকরাম আরও বলেন, ‘তাকে (নাজমুল হাসান পাপন) জানানো ছাড়া আমি আপনাদের কিছু বলতে পারব না। তিনটার দিকে আজ কল করেছিলাম, ধরেননি। হয়তো যেকোনো সময় কল ব্যাক করবেন। কল করলে তার সঙ্গে আলাপ করে নেব।’
নিশ্চিত করলেন পারিবারিক কারণে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। বলেন, ‘পারিবারিক কারণেই সরে যেতে চাচ্ছি। যেহেতু আমি এখানে অনেক বছর ছিলাম। এখানে মানসিক ও শারীরিক শক্তির দরকার হয়। সব মিলিয়েই এই বিরতির সিদ্ধান্ত। তার (নাজমুল হাসান পাপন) সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত, এখন আমি এ নিয়ে কিছুই বলতে চাই না। তার পরামর্শ অনুসরণ করব আমি।’
২০১৪ সালে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান হয়েছিলেন আকরাম। পরের বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় আসে এই দ্বায়িত্বে। এরপর ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবার চেয়ারম্যান হয়ে ফেরার পর দায়িত্ব পালন করলেন টানা ৬ বছর। গত অক্টোবরে সবশেষ বোর্ড নির্বাচন হয়েছে। এরপর নতুন করে পদ বণ্টন করা হয়নি। অবশ্য নির্বাচিতরা পরিচালকরা নিজ নিজ বিভাগেই বহাল আছেন।
ঠিক এমন সময়ে সমালোচনার তোপে ছিলেন আকরাম। তার পরিপ্রেক্ষিতে সরেই গেলেন। স্ত্রী সাবরিনা আকরাম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেছেন, ‘ক্রিকেট অপারেশন্স ছেড়ে দিচ্ছেন আকরাম খান।’ টানা ৬ বছর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এই সময়ে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, স্টিভ রোডস, রাসেল ডমিঙ্গোসহ একাধিক কোচের সঙ্গেই কাজ করেছেন। দায়িত্ব পালনকালে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার অবসর, সাকিবের টেস্ট থেকে ছুটি নেওয়া, অস্ট্রেলিয়া সিরিজে মুশফিককে না পাওয়া ছাড়াও অনেক ঘটনা ঘটেছে।
এই ব্যাপারগুলো তাকে হয়তো বিব্রত করেছে। তার পথ ধরে দ্বায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন আকরাম খান। তবে বিসিবিতে অন্য দ্বায়িত্বে জড়িয়ে থাকবেন তিনি।
Discussion about this post