ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
বেশ কিছুদিন ধরেই করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছিলেন স্বাধীন বাংলা দলের ফুটবলার কে এন নওশেরুজ্জামান। শেষ পর্যন্ত অবশ্য প্রাণঘাতী এ ভাইরাসকে হারাতে পারলেন না তিনি। রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় সোমবার রাতে মৃত্যুবরণ করেন এক সময়ের খ্যাতিমান ৭২ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। স্ত্রী ও এক ছেলে এবং এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি।
নওশের এ মাসেই শুরুর দিকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। শুধু তিনিই নন, তার স্ত্রীও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে নিজ বাড়িতেই তারা চিকিৎসা নিচ্ছেলেন। নওশের স্ত্রী অবশ্য সেখানে সুস্থ হন। কিন্তু অবস্থার অবনতি হতে থাকে স্বাধীন বাংলা দলের ফুটবলারের। যে কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ছিলেন লাইফ সাপোর্টে।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়মিতই খোঁজখবর রাখছিলেন নওশেরের। এরপর তিনি হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানতেই হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লু খেতাব পাওয়া এই খেলোয়াড়কে।
রাজধানীর মুগদা হাসপাতাল ও গ্রীন লাইফে চিকিৎসা নেওয়ার পর নওশেরকে ভর্তি করা হয়েছিল ইবনে সিনা হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন তার চাচাতো ভাই সাইদুজ্জামান, ‘নওশের ভাইকে শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো যায়নি। লাইফ সাপোর্ট দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি আমাদের সবাইকে ফেলে অন্য লোকে চলে গেছেন।’
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলে তরুণ বয়সে যোগ দিয়েছিলেন নওশের। খেলেছিলেন ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত। দীর্ঘদিন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। শুধু তা-ই নয় এ ফরোয়ার্ড সাদা-কালোদের জার্সিতে খেলেছেন ক্রিকেটও। ছিলেন ওপেনার। এদিকে এ ফরোয়ার্ড ভিক্টোরিয়া ও কলাবাগানের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন ১৭ বছর।
এরআগে ১৯৫০ সালের ৫ ডিসেম্বর মুন্সিগঞ্জে জন্ম নিয়েছিলেন নওশেরুজ্জামান। আর ক্লাব ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ১৯৬৭ সালে রেলওয়ের হয়ে। এরপর ওয়ারী, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াপদা ঘুরে ১৯৭৫ সালে যোগ দেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে। ১৯৭৮ থেকে ৮০ সাল পর্যন্ত খেলেছেন ওয়ান্ডারার্সে। শেষ পর্যন্ত সোমবার এক সময়ে তারকা এ ক্রীড়াবিদ করোনার কাছে হেরে মেনে পাড়ি জামান না ফেরার দেশে। তার মৃত্যুতে শোকাহত দেশের ক্রীড়াঙ্গন।
Discussion about this post