জিম্বাবুয়ের সামান্য অঘটনের আশা কি দেখা গিয়েছিল? প্রথমে ব্যাট করতে নামা ভারতের ৪ উইকেট ৬৫ রানে ফেলে দিলে তো কারও কারও সে রকমই মনে হচ্ছিল। তবে আদতে কিছুই হয়নি। কাল হারারাতে দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও জিম্বাবুয়েকে ৫৮ রানে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে বিরাট কোহলির ভারত। ৫০ ওভারে সফরকারীদের তোলা ৮ উইকেটে ২৯৪ রানের জবাবে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৩৬ রান তুলেই শেষ জিম্বাবুয়ে।
জয়ের জন্য ২৯৫ রানের টার্গেট তাড়া করে জিম্বাবুয়ের শুরুটাও হয়েছিল আশা জাগানিয়া। ভুজি সিবান্দা এবং সিকান্দার রাজা ১০ ওভারে ৪৫ রানের জুটি গড়েছিলেন। রাজা ২০ রানে জয়দেব উনাড়কাটের বলে ফিরে গেলে সিবান্দা ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজাও রানের চাকা মোটামুটি সচল রেখেছিলেন। কিন্তু স্পিনাররা আসতেই জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের ‘সাহস’ শেষ। রবীন্দ্র জাদেজা, অমিত মিশ্র ও সুরেশ রায়না মিলে জিম্বাবুয়েকে বেঁধে ফেলেন। যাতে উইকেটও পড়েছে নিয়মিত। সঙ্গে জয়ের জন্য ওভারপ্রতি রানের চাহিদাও ক্রমে আকাশ ছুঁয়েছে। ১৩৩ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর ম্যাচের আর কিছুই বাকি ছিল না। শুধু দেখার ছিল কতদূর যেতে পারে জিম্বাবুয়ে। এলটন চিগুম্বুরা ও প্রসপার উতসেয়ার ‘দল তো হারছেই আমরা খেলে যাই’ গোছের ব্যাটিংয়ে ৮৮ রানের জুটি হারের ব্যবধান কমালেও তাতে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের ইতিবাচক কিছু মেলেনি। ৪১ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন ভারতীয় পেসার উনাড়কাট।
টসে জিতে জিম্বাবুয়ে ব্যাটিং করতে পাঠিয়েছিল ভারতকে। তাতে অনেকে হয়তো বিস্মিতই হয়েছিলেন। কিন্তু একসময় যখন ৬৫ রানে ভারতের ৪ উইকেট ফেলে দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে, তখন মনে হয়েছিল স্বাগতিক অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর হয়তো সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। কিন্তু সবই গরল ভেল। শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের সামনে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৯৪ রানের পাহাড়সম স্কোরই দাঁড় করায় ভারত।
এমন স্কোরে সবচেয়ে বড় অবদান অন্যতম ওপেনার শিখর ধাওয়ানের। তার অনবদ্য ১১৬ রানের সুবাদেই সফরকারীরা পায় প্রায় তিনশ’ ছোঁয়া পুঁজি। ১৭ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে এটা ধাওয়ানের তৃতীয় সেঞ্চুরি। ১২৭ বলের ইনিংসে ছিল দুটি ছক্কা ও ১১টি বাউন্ডারি। বাঁহাতি এ ওপেনারকে সঙ্গ দেন দিনেশ কার্তিক। ৭৪ বলে ছয় চারে তিনিও করে যান ৬৯ রান। ধাওয়ান ও কার্তিকের পঞ্চম উইকেটে ১৬৭ রানের জুটিই ভারতকে পথে ফেরায়। এ রান তুলতে দু’জনে খরচ করেছেন ১৫৪ বল।
তবে জিম্বাবুয়ের ফিল্ডিংও এর জন্য খানিকটা দায়ী। সেঞ্চুরি করার পথে ধাওয়ান তিনটি জীবন পেয়েছেন। মাত্র তিন রানের মাথায় পেসার কাইলি জারভিসের বলে উইকেটকিপার টেলরের হাতে ক্যাচ দিয়েছিলেন ধাওয়ান। কিন্তু নো বল। ১৪ রানের মাথায় একই বোলারের বলে এবার সহজ ক্যাচ ফেলেন টেলরই। এরপর ৭০ রানের মাথায় ফের ক্যাচ পড়ে ধাওয়ানের। ভাগ্যের এ সহায়তা কাজে লাগাতে ভুল করেননি ভারতীয় ওপেনার। তুলে নেন সেঞ্চুরি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :ভারত : ২৯৪/৮, ৫০ ওভার (ধাওয়ান ১১৬, কার্তিক ৬৯, বিনয় ২৭*, কোহলি ১৪, জাদেজা ১৫; ভিটোরি ২/২৭)। জিম্বাবুয়ে : ২৩৬/৯, ৫০ ওভার (সিবান্দা ৫৫, উতসেয়া ৫২*, চিগুম্বুরা ৪৬, মাসাকাদজা ৩৪; উনাড়কাট ৪/৪১, মিশ্র ২/৪৬)। ফল : ভারত ৫৮ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা : শিখর ধাওয়ান।
Discussion about this post