বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে এতোটা অসহায় নিকট অতীতে আর দেখা যায়নি। জয় দুরে থাক, লড়াই করার শক্তিটাও যেন হারিয়ে ফেলেছেন দলের ক্রিকেটাররা। টেস্ট সিরিজের পর পর ওয়ানডেতেও সেই একই গল্প। টানা তিন ম্যাচেই লেখা হল ব্যর্থতার কাব্য। যে উইকেট দক্ষিণ আফ্রিকানরা ব্যাট হাতে দাপট দেখালো সেখানেই কীনা নাজেহাল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। দল হারল ২০০ রানের বিশাল ব্যবধানে। সিরিজের তৃতীয় ও শেষে ম্যাচের এই হারে টেস্টের পর ওয়ানডে সিরিজেও প্রোটিয়াদের কাছে হোয়াইট ওয়াশ হল বাংলাদেশ।
রোববার ইস্ট লন্ডনে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। অধিনায়কত্বের ৫০তম ম্যাচে প্রথমে বোলিংয়ে নামতে হয় মাশরাফির। স্বাগতিক দল ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে তুলে ৩৬৯ রান। জবাব দিতে নেমে সাকিব আল হাসানের হাফসেঞ্চুরির পরও ৪০.৪ ওভারে অলআউট হয়ে ১৬৯ রান করে বাংলাদেশ।
ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্কে সিরিজের আগের ম্যাচের ৩৫৩ রান টপকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। শুধু এটাই নয়, বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের সর্বোচ্চ ৩৫৮ রান পেছনে ফেলে গড়ে নতুন রেকর্ড। ওপেনার টেম্বা বাভুমা ৪৮ রানে ফিরলেও কুইন্টন ডি কক করেন ৭৩। ফাফ ডু প্লেসিস নার্ভাস ৯১ রানে গিয়ে ইনজুরিতে পড়ে মাঠে ছাড়েন। এইডেন মার্করাম অভিষেক ম্যাচে করেন হাফসেঞ্চুরি (৬৬)। ডি ভিলিয়ার্সকে অবশ্য ফিরে যান ২০ রানে। কাগিসো রাবাদা ১১ বলে করেন ২৩। ২৪ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত ফারহান বেহারদিন।
৫৯ রানে ২ উইকেট নেন দলে ফেরা মেহেদী হাসান মিরাজ। তাসকিন ২ উইকেট নিতে ৭ ওভারে দেন ৬৬ রান। দুই অভিজ্ঞ বোলার সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি উইকেট পাননি।
জিততে হলে রেকর্ড গড়া লক্ষ্য ছিল সামনে। কিন্তু হযবরল ক্রিকেট খেলে গেছে বাংলাদেশ। এক পর্যায়ে ৫ ওভারে ৩ উইকেট ২০। ৮ রানে বিদায় সৌম্য সরকারের। ইমরুল কায়েস (১) ও লিটন দাস (৬) চট জলদি সাজঘরে ফিরেন। কিছুটা সময় লড়েছেন সাকিব আল হাসান। ৬৩ রান করেন তিনি। বোলারদের পর ব্যাটসম্যানদের এমন ব্যর্থতাতেই নেতৃত্বের পঞ্চাশতম ম্যাচটা স্মরনীয় হল না মাশরাফির। হোয়াইট ওয়াশের তিক্ততা নিয়ে দেশে ফিরছেন তিনি। তবে সাকিবের নেতৃত্বে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এবার দুটি টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ৩৬৯/৬ (বাভুমা ৪৮, ডি কক ৭৩, দু প্লেসি আহত অবসর ৯১*, মারক্রাম ৬৬, ডি ভিলিয়ার্স ২০, বেহারদিন ৩৩*, মুল্ডার ২, ফেলুকওয়ায়ো ৫, রাবাদা ২৩*; মাশরাফি ০/৬৯, মিরাজ ২/৫৯, রুবেল ১/৭৫, সাকিব ০/৫৬, তাসকিন ২/৬৬, মাহমুদউল্লাহ ০/৩৩, সাব্বির ০/৮)
বাংলাদেশ: ৪০.৪ ওভারে ১৬৯/১০ (ইমরুল ১, সৌম্য ৮, লিটন ৬, মুশফিক ৮, সাকিব ৬৩, মাহমুদউল্লাহ ২, সাব্বির ৩৯, মেহেদী ১৫, মাশরাফি ১৭, তাসকিন ২; পেটারসন ৩/৪৪, তাহির ২/২৭, মার্করাম ২/১৮)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ২০০ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: ফাফ ডু প্লেসিস
সিরিজ: ৩ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩-০তে জয়ী
সিরিজসেরা: কুইন্টন ডি কক
Discussion about this post