২৪ ও ২৫ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠেয় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বার্ষিক সাধারণ সভা এখন রয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর ও কূটনৈতিক কৌশলের কেন্দ্রে। ভারতের অনমনীয় অবস্থান ও পাকিস্তানের দৃঢ় মনোভাবের কারণে শুধু সভাই নয়, আসন্ন এশিয়া কাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা নিয়েও দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।
এসিসি চেয়ারম্যান ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রধান মহসিন রাজা নকভি এরই মধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছেছেন। তিনি ঢাকা সফরকালে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, সভা সফল হবে। তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, তারা ঢাকায় এসে সভায় অংশ নেবে না। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও তাদের মূল আপত্তি বৈঠকের ভেন্যু ঘিরে। তারা বিকল্প স্থান চেয়েছিল-পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোনো নিরপেক্ষ দেশ। কিন্তু এসিসি এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়নি।
ভারতের পাশে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান এবং ওমান। তারা জানিয়েছে, ভারত না গেলে তারাও প্রতিনিধি পাঠাবে না। ফলে, এসিসির প্রায় অর্ধেক শক্তি এই বৈঠকের বাইরে থাকতে পারে। অ্যাসোসিয়েট সদস্য দেশগুলোর বড় অংশও ভারতমুখী মনোভাব পোষণ করছে। নেপাল, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, বাহারিন, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে হওয়ার কথা ছিল এশিয়া কাপ। কিন্তু ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনা এবং জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে এই আয়োজন নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। ভারতের ভেন্যু বাতিল হওয়ায় এসিসি নতুন করে আলোচনা শুরু করে। কিন্তু এখন সেই আলোচনাই ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কেবল একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট নয়-এটি এখন ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক অবস্থান, আঞ্চলিক নেতৃত্ব ও প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রেও প্রতীক হয়ে উঠেছে। পাকিস্তান নেতৃত্বাধীন এসিসি যদি ভারতের মত উপেক্ষা করে বৈঠক চালায়, তাহলে এশিয়া কাপের সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। অপরদিকে, ভারত যদি কৌশলগতভাবে এড়িয়ে যায়, তাহলে এসিসির ঐক্যই ভেঙে যেতে পারে।
এসিসির কিছু প্রভাবশালী সদস্য চাইছে বৈঠকটি সিঙ্গাপুরে স্থানান্তর করা হোক, যেখানে নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক পরিবেশ অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু চেয়ারম্যান নকভি এখনো সে প্রস্তাবে সায় দেননি।
Discussion about this post