মাঠের বাইরের কিছু ঘটনায় শেষ দিকে ক্রিকেটের উত্তেজনাও যেন হার মানতে যাচ্ছে। এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) ফিক্সিং নিয়ে অভিযোগ উঠল। এরইমধ্যে এই ইস্যুতে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কর্তারাও।
রংপুর রাইডার্সের ম্যানেজার সানোয়ার হোসেন ও দলটির সাবেক খেলোয়াড় জুপিটার ঘোষকে নিষিদ্ধ করেছে তারা। তেমন আবহে সোমবার জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবরও অভিযোগ তুলেন নিজ দল বরিশাল বুলসের দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের ওপর। বিসিবি এবং আইসিসির এন্টি করাপশন ইউনিটকে (আকসু) এ ব্যাপারে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে বলেছিলেন তিনি। ফেসবুকে তার এমন স্ট্যাটাসের জবাবটা এবার দিলেন বুলস ক্যাপ্টেন মুশফিকুর রহীম।
মঙ্গলবার কুমিল্লার কাছে ৮ উইকেটে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে মুশফিক বলেন, ‘শোনার পর এবং নিজের চোখে দেখার পর নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। উনি আমাদের দেশে প্রায় সেলিব্রেটি এবং এত শিক্ষিত একজন মানুষ, তার মুখ থেকে এরকম কথা আসবে বা লিখবে এরকম, এটা বিরক্তিকর ও লজ্জাজনক। কারণ খেলোয়াড় হিসেবে আমি যে দলেই খেলি না কেন, এই দলেও আমরা দেশি-বিদেশী সবাই এত কষ্ট করে খেলছে, এত পেশাদারীত্ব, এটাই আমাদের রুটি-রোজগার, এটার সঙ্গে যদি কেউ বেঈমানি করে, এর চেয়ে বড় কিছু আর হতে পারে না। উনি যেটা লিখেছেন, খুব কষ্ট লাগছে। উনি এটা মাথা ঠিক অবস্থায় লিখেছেন নাকি বেঠিক অবস্থায়, নিজেও জানি না। আমার প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছে উনাকে, সামনে পেলে প্রশ্ন করব, কোন পরিস্থিতি দেখে আপনার মনে হয়েছে বা কোন দেশি বা বিদেশী খেলোয়াড় জড়ি। উনি লিখেছেন যে উনি নিশ্চিত, কিন্তু প্রমাণ নেই। এটা কোন ধরণের ভাষা! এটাই বলে দেয় উনি কোন সেন্সে ছিলেন।
ক্রিকেটের বাইরের লোক খেলায় থাকলে এরকম হয়? এই প্রশ্নের জবাবে মুশফিক বলেন, ‘দিনশেষে সেটা তো অবশ্যই। তারও খেলার প্রতি প্যাশন আছে, অনেক ভাবে জড়িত ছিলেন। এরকম লোকের কাছ থেকে এরকম অভিযোগ আসা হতাশাজনক। উনি বলতে পারতেন যে আমাদের খেলায় উনি আপসেট। সেটা হতেই পারে। উনি কেন, বরিশালবাসী সবাই আপসেট। ভালো করতে পারছি না, এটা অন্য কথা। কিন্তু উনি যেভাবে লিখেছেন, একজন মানুষের পক্ষে এটা লেখা সম্ভব না, পাগল ছাড়া।
এর আগে আসিফ তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লিখেন, ”ক্রিকেট ক্রিকেট করে আমার এক জীবন গেলো। বরিশাল বুলস কর্তৃপক্ষের উৎসাহ এবং ভালোবাসায় প্রায় আট বছর পর মাঠে গিয়েছি, অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। দর্শক, উত্তেজনা, মাঠের পরিবেশ সব মিলিয়ে অদ্ভুত মূর্ছনা। শুধু বিপথগামী ডিজেগুলোর হিন্দি গানের যন্ত্রণাটা একটু পীড়া দিয়েছে, মেরুদণ্ড না থাকলে যা হয় আর কি।
সব নির্মল অনুভূতিগুলোতে পানি ঢেলে দিয়েছে সন্দেহ। ১৭, ১৮, ১৯ এবং ২০ নম্বর ওভারগুলোতে ব্যাটসম্যানরা হয়ে যায় প্রতিবন্ধী আর বোলাররা হয়ে যায় বাঘ। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট জুয়ার অপর নাম। দর্শক হিসেবে মাঠে যাই খেলা দেখতে আর আমাদের নিয়ে খেলা হয় টেবিলে। সন্দেহ ঢুকেছে প্রেসবক্সেও।
অন্য কোন দলের কথা বলবো না। আমার দল বরিশাল বুলসের বিদেশি এবং দেশি খেলোয়াড়দের একটা অংশ ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত আমি নিশ্চিত, প্রমাণ নেই। তবে বিসিবি এবং আকসু যদি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দেয় তাহলে অবশ্যই তারা প্রমাণ খুঁজে পাবেন, আমার বিশ্বাস। গরীব দল বুলস, ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের জন্য খারাপ লাগছে। তবে আমি কৃতজ্ঞ তাদের প্রতি। আত্মঘাতী গোলে হেরে যাওয়ার জন্য বরিশাল বুলসের জন্য সমবেদনা। ছিলাম আছি থাকবো ক্রিকেটের সঙ্গে। জয় হোক বাংলাদেশ ক্রিকেটের। অনেক হয়েছে, এবার একটু রেকর্ডিং এ মনোযোগ দেই।’
Discussion about this post