টেস্ট সিরিজ শেষ, কিন্তু কলম্বো মিশন শেষে ফেরার আগে নাজমুল হোসেন শান্ত রেখে গেলেন বড় একটি প্রশ্ন-একই দলে তিনজন অধিনায়ক থাকলে নেতৃত্বের ভারসাম্য বজায় থাকে কি?
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর আজ সংবাদ সম্মেলনের শেষ মুহূর্তে শান্ত জানিয়ে দিলেন, তিনি আর বাংলাদেশ টেস্ট দলের নেতৃত্বে থাকতে চান না। যতটা না হঠাৎ, তার চেয়ে বেশি ছিল পরিকল্পিত এবং ভেতর থেকে আসা দ্বিধার বহিঃপ্রকাশ। শান্ত বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে চাই, এটা কোনো আবেগ বা রাগের সিদ্ধান্ত নয়। বরং আমার মনে হয়েছে, দলের বৃহত্তর স্বার্থেই আমাকে সরে দাঁড়ানো উচিত।’
আসলে শান্তর সমস্যা নেতৃত্ব নয়, সমস্যা নেতৃত্বের ছড়িয়ে থাকা। তিনি মনে করেন, এক দলে তিন সংস্করণে তিনজন আলাদা অধিনায়ক থাকলে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। দলের মধ্যে একটি স্পষ্ট কাঠামো দরকার-যেটা তিনি খুঁজে পাচ্ছিলেন না।
২০২৩ সালের শুরুতে তিন ফরম্যাটের নেতৃত্ব তাঁর কাঁধে উঠলেও সময়ের ব্যবধানে পরিস্থিতি বদলায়। টি-টোয়েন্টি নেতৃত্ব তিনি নিজেই ছেড়েছেন, ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে চেয়ে। এরপর বিসিবি তাকে সরিয়ে দেয় ওয়ানডে থেকে, এবং হঠাৎ করে দায়িত্ব তুলে দেয় মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে-যা ছিল শান্তর জন্য একরকম বার্তা।
আজ যখন তিনি টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়লেন, তখন একপ্রকার স্বস্তিও যেন পাওয়া গেল তার কণ্ঠে। দলের ভেতর নেতৃত্ব নিয়ে বিভ্রান্তি-তা তিনি আরও বাড়াতে চাননি। বরং তার বিশ্বাস, নেতৃত্বের চেয়ে স্থিতিশীলতা বেশি জরুরি। বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ আগেই করেছিলেন তিনি। বিসিবি যদিও প্রকাশ্যে তা স্বীকার করেনি, শান্ত বললেন, ‘আমি আগেই জানিয়েছি ক্রিকেট অপারেশন্সকে। অনেক আগে থেকেই সিদ্ধান্তটা পাকা ছিল।’
শান্তর বিদায় আরও একটি ইঙ্গিত দেয়-বিসিবির নেতৃত্ব কাঠামোতে হয়তো কোনো সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নেই। হঠাৎ পরিবর্তন, ব্যাখ্যাহীন সিদ্ধান্ত এবং অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের ঘাটতি হয়তো শান্তর মতো একজন ক্রিকেটারকে বাধ্য করেছে সরে দাঁড়াতে!
Discussion about this post