তিনি নিজের চোখকে যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। বিশ্বের সবচেয়ে অভিজাত টেনিস টুর্নামেন্টটা জিতে ফেলেছেন তিনি! সাবিন লিসিস্কিকে সরাসরি সেটে হারানোর (৬-১, ৬-৪) পর তাই আনন্দের অতিশায্যে ভাসলেন মারিও বারতোলি। হাতের র্যাকেট ফেলে দিয়ে ঊর্ধ্বশ্বাসে উঠে গেলেন গ্যালারিতে। আলিঙ্গন করলেন সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে শুভকামনা করতে থাকা বাবা, ফরাসি সাবেক টেনিস তারকা অ্যামেলি মরেসমো, কোচ, ফিজিক্যাল ট্রেনারদের। এমন উচ্ছ্বাস তো তিনি করতেই পারেন। প্রথমত এটা তার প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম। যে ট্রফিটা তিনি জিতেছেন তার নাম উইম্বলডন। এটা যে টেনিসের অঘোষিত বিশ্বকাপ।
বেচারা সাবিন লিসিস্কি। বারতোলির এটা দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনাল হলেও জার্মান তরুণীর এটা ছিল প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম। এর আগে একটাই মাত্র কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা ছিল তার এবং সেটা গত বছর ইউএস ওপেনে। এবারের উইম্বলডনে সেরেনাকে হারিয়ে দেখালেন চমক। সেমিতে রাদওয়ানাস্কাকে হারিয়ে উঠে এলেন ফাইনালে। স্বপ্ন দেখেছিলেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। কিন্তু বারতোলির পাওয়ার টেনিসের কাছে পাত্তা পেলেন না লিসিস্কি। হতাশ এ জার্মান সুন্দরী তাই তো ম্যাচ শেষে কাঁদলেন।
পাওয়ার টেনিসের জন্য এতদিন বিখ্যাত ছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। এবারের উইম্বলডনে সেরেনা নয়, পাওয়ার টেনিস দেখালেন বারতোলি। প্রথম রাউন্ড থেকে ফাইনাল পর্যন্ত কোনো ম্যাচেই তাকে তিন সেটে যেতে হয়নি। প্রতিটি ম্যাচই তিনি জিতেছেন সরাসরি দুই সেটে। সেই ধারা বজায় ছিল ফাইনালেও। লিসিস্কিকে প্রথম সেটে উড়িয়ে দেন ৬-১-এ। দ্বিতীয় সেটে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন জার্মান তারকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি। ৬-৪-এ দ্বিতীয় সেট জিতে টেনিসের নতুন অধ্যায়ে নাম লেখান ফরাসি তারকা মারিও বারতোলি।
ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বসিত বারতোলি বলছিলেন, ‘আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। এটা আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত। সেই ছয় বছর বয়স থেকেই এ ট্রফির স্বপ্ন দেখেছি আমি। আমার সেই স্বপ্ন সত্যি হল আজ (কাল)। বিশ্বাসই হচ্ছে না আমার। আশা করি আগামী বছরও এখানে ভালো করতে পারব। সাবিনকে আমার শুভেচ্ছা। আশা করি আগামী দিনগুলোতে সে আরও এগিয়ে যাবে।’
টুর্নামেন্টে দুরন্ত পারফর্ম করেও ফাইনালে জিততে পারলেন না। তাই তো হতাশ লিসিস্কি বলছিলেন, ‘কী বলব, আমি সব কিছুর জন্য বিস্মিত। জয়টা তারই প্রাপ্য ছিল। শুরু থেকেই সে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। আমি আরও ভালো খেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পারিনি। এবার এখানে ফাইনালে খেললাম। আশা করি আগামীতেও এ সুযোগ আসবে আমার।’
Discussion about this post