একটা সময় ছিল যখন ঢাকার আকাশ-গলি কাঁপত এই ম্যাচের আগের দিন। ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে থাকত একটাই প্রশ্ন—আবাহনী না মোহামেডান, জিতবে কে? শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে জায়গা পেত না সূঁচ ফেলারও। সে আমেজ কিছুটা ফিকে হয়ে এলেও, শনিবার আবার মুখোমুখি হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী—আবাহনী লিমিটেড বনাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
তবে এবার খালি ঐতিহ্যের লড়াই নয়, ম্যাচের পেছনে আছে পয়েন্ট টেবিলের ক্যালকুলেশন। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে আবাহনী যখন শীর্ষে, মোহামেডান ঠিক পিছনে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে। এই ম্যাচটা হারালে আবাহনীকে টপকে যেতে পারবে না মোহামেডান, কিন্তু জিতলে সমান পয়েন্টে সমতায় ফিরবে—যা সুপার লিগের আগে দারুণ আত্মবিশ্বাস জোগাবে হৃদয়দের।
আবাহনীর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত নিজেও স্বীকার করছেন-আগের মতো দর্শক নেই, গ্যালারির গর্জন কমেছে। তবে খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা এখনও আগের মতোই, ;আমরা যারা মাঠে নামি, তারা জানি এই ম্যাচের গুরুত্ব কতটা। এটা শুধু দুই পয়েন্টের খেলা না, এটা গর্বের, আত্মমর্যাদার লড়াই। ছোটবেলা থেকেই এই দুই দলে খেলার স্বপ্ন দেখতাম।’
শান্ত আরও যোগ করেন, ‘ভাগ্যক্রমে আবাহনীতে খেলতে পারছি, এখন দলের নেতৃত্ব দিচ্ছি-এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়।’
আবাহনী-মোহামেডানের লড়াই এখন আর শুধু লিগ টেবিল নির্ধারণ করে না, সেটি একটি মূল্যবান ঐতিহ্য বয়ে নিয়ে চলে। যেখানে প্রতিটি ডেলিভারি, প্রতিটি রান শুধু স্কোরবোর্ডে নয়, জমা হয় দুই ক্লাবের ইতিহাসে।
তবে বর্তমান বাস্তবতা একটু ভিন্ন। দর্শকরা আগের মতো আবেগ দেখান না, স্টেডিয়াম এখন অনেকটাই নীরব। শান্ত নিজেও জানেন না কেন এমনটা হলো। তবে আশা হারাননি তিনি। ‘আমি আশা করি দর্শকরা আবার মাঠে ফিরবেন, গ্যালারিতে গলা ফাটাবেন। খেলোয়াড়দের জন্য সেটা অনেক বড় অনুপ্রেরণা। -বললেন শান্ত।
আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ মানেই একটা প্রজন্মের স্মৃতি, আরেক প্রজন্মের স্বপ্ন। ক্রিকেটের বাইরের হিসাব-নিকাশ যতই পাল্টে যাক, এই দুই দলের মাঠের লড়াইয়ের আবেদন কমে না কখনও। শনিবারের ম্যাচটা তাই শুধুই লিগ টেবিলের হিসাব মেলানোর জন্য নয়—এটা সেই হারানো উত্তেজনাকে আবার খুঁজে পাওয়ার একটা সুযোগ।
Discussion about this post