ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
ব্যাট-বল দুটোতেই এখনো বিশ্বকাপে ঝলসে উঠতে পারছে না আফগানিস্তান। বিশ্বকাপ শুরুর আগে মনে হচ্ছিল বড় দলগুলোর জন্য মাথাব্যথার কারণ হতে পারে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে সেই দৃশ্য অদৃশ্য! মঙ্গলবার ইংল্যান্ডের সামনে কোনঠাসা আফগানরা। দুর্দান্ত জয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে গেল ইংল্যান্ড।
ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে মঙ্গলবার ১৫০ রানের বড় ব্যবধানে ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড।
এ অবস্থায় বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচ খেলে স্বাগতিকদের অর্জন ৮ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট অস্ট্রেলিয়ারও। তবে রানরেটে ইংল্যান্ডের চেয়ে পিছিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। লড়াইয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে এরপরই ভারত ও নিউজিল্যান্ড। ৫ পয়েন্ট নিয়ে ৫ নম্বরে আছে মাশরাফি বিন মর্তুজার বাংলাদেশ।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ইয়ন মরগান। নিজেই প্রতিপক্ষের বোলারদের তুলোধুনো করে ছক্কার ঝড় বইয়ে দেন। আর গড়েন ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড। ইংলিশরা ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে করে ৩৯৮ রান। জবাব দিতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৭ রানে আটকে যায় আফগানরা।
আসলে এতো বড় সংগ্রহকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাধ্য নেই আফগানিস্তানের। কারণ ইংলিশদের বোলিং অ্যাটাক বিশ্বসেরা। তারমধ্যে শুরুতেই ফেরেন ওপেনার নুর আলি জারদান। তারপর গুলবাদিন নাইব ও রহতম শাহ দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তুলেন ৪৮ রান। নাইব ফেরেন ৩৭ রানে। রহমত ৪৬ রান তুলে তাকের অনুসরণ করেন। হাশমতউল্লাহ শাহিদি লড়াই করে তুলে নেন ৭৬ রান। আসগর আফগানের ব্যাটে ৪৪।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে ব্যাট হাতে রাজত্ব করেছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। পাত্তাই পাননি রশিদ খানরা। বিশ্বকাপ ইতিহাসে ইংল্যান্ড গড়ে তাদের সর্বোচ্চ রান। আগের রেকর্ড ছিল কার্ডিফে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ৩৮৬ রান।
মরগান ৭১ বলে ৪ চার ও ১৭ ছক্কায় তুলেন ১৪৮ রান। ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ছক্কার (১৭) রেকর্ড গড়লেন তিনি। শতরান করেন ৫৭ বলে। বিশ্বকাপে এটি চতুর্থ দ্রুততম সেঞ্চুরি। তার উপরে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স (৫২ বল), অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৫১ বল) ও আয়ারল্যান্ডের কেভিন ও’ব্রায়েন (৫০ বল)।
আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খান ৯ ওভারে দেন ১১০ রান। যা বিশ্বকাপে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের পেসার মার্টিন স্নেডেন দিয়েছিলেন ১২ ওভারে ১০৫ রান।
ওয়ানডেতে যৌথভাবে দ্বিতীয় খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েন রশিদ। ২০১৬ সালে ট্রেন্ট ব্রিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০ ওভারে ১১০ রান দিয়েছিলেন পাকিস্তানের পেসার ওয়াহাব রিয়াজ। একটুর জন্য আরো কলঙ্ক লাগেনি রশিদের গায়ে। ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ ওভারে ১১৩ রান দিয়ে অপ্রত্যাশিত বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার মিক লুইস।
সেই যন্ত্রণার সঙ্গে ম্যাচটাও হারল আফগানরা। পাঁচ ম্যাচ খেলে বিশ্বকাপে জয় অধরা হয়েই আছে তাদের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৯৭/৬ (ভিন্স ২৬, বেয়ারস্টো ৯০, রুট ৮৮, মরগান ১৪৮, বাটলার ২, স্টোকস ২, মইন ৩১*, ওকস ১*; দৌলত ৩/৮৫, নাইব ৩/৬৮)
আফগানিস্তান: ৫০ ওভারে ২৪৭/৮ (জাদরান ০, নাইব ৩৭, রহমত ৪৬, শাহিদি ৭৬, আসগর ৪৪, নবি ৯, নাজিবউল্লাহ ১৫, রশিদ ৮, ইকরাম ৩*, দৌলত ০*; আর্চার ৩/৫২, উড ২/৪০, রশিদ ৩/৬৬)
ফল: ইংল্যান্ড ১৫০ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: এউইন মরগান
Discussion about this post