ক্রিকবিডি২৪.কম রিপোর্ট
প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতা কাটিয়ে দল ফিরেছিল চেনা ছন্দে। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে দারুণ প্রতিরোধ গড়েন সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিন অঙ্কের ম্যাজিকেল স্কোরের দেখা পেয়েছিলেন দু’জনই। কিন্তু তার শতরানের দিনে ব্যর্থ অন্যরা। এ কারণে হ্যামিল্টন টেস্টেও বড় হার বাংলাদেশের।
টাইগারদের রোববার ইনিংস ও ৫২ রানে হারালো নিউজিল্যান্ড। এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে কিউইরা।
এর আগে নিউজিল্যান্ড গড়ে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্কোর। থামে ৭১৫ রানে। প্রথম ইনিংসে ৪৮১ রানের লিড নেয় কিউইরা। এরপর শনিবার টেস্টের চতুর্থ দিনে বেশ দাপটেই খেলছিল টাইগাররা। কিন্তু শেষ সেশনে ৪২৯ রানে অলআউট দল।
সৌম্য ও মাহমুদউল্লাহর জুটিতে এক সময় বাংলাদেশ আশা জাগিয়েছিল ইনিংস পরাজয় এড়ানোর। চতুর্থ উইকেটে দুজনের জুটির রান ২৩৫; পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ। কিন্তু এই দুজন ছাড়া দাঁড়াতে পারেননি আর কেউ।
ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে সৌম্য ছুঁয়েছেন বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। লাঞ্চের পর ফিরেছেন ১৪৯ রান করে। হ্যামিল্টনে দ্বিতীয় আর ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরিতে মাহমুদউল্লাহ করেছেন ক্যারিয়ার সেরা ১৪৬।
আগের দিনই লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১২৬ রানে দল ৪ উইকেট পতনের পর হাল ধরেন তারা। এরপর অসাধারণ স্কিল আর পরিকল্পনায় দলকে এগিয়ে দেন দু’জন। তাদের সাবলীল গতির ব্যাটিং স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল অন্তত ইনিংস ব্যবধানে হার বাঁচাবে দল।
আক্রমনাত্মক ক্রিকেট খেলে দলকে পথ দেখাচ্ছিলেন তারা। এরমধ্যে সৌম্য ফিফটি করেন ৬০ বলে। দারুণ সাহসিকতায় কিউইদের শর্ট বল খেলেছেন সৌম্য-রিয়াদ। পুল শট খেলেছেন নিয়ন্ত্রিত। বুঝিয়ে দিয়েছেন এই উইকেটে রান তোলা কঠিন নয়।
রোববার দিনের প্রথম ঘণ্টায় ১৪ ওভারে বাংলাদেশ করে ৭৮ রান, ছিল ১১ চার ও ৩ ছক্কা! বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ার হাতছানি ছিল সৌম্যর। তবে নতুন রেকর্ড গড়তে না পারলেও ছুঁয়েছেন তিনি। ৯৪ বলে করেন সেঞ্চুরি। ২০১০ সালে লর্ডসে ৯৪ বলে সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়েন তামিম ইকবাল।
রোববার সকালের সেশনে ২৯ ওভারেই ১৩৬ রান করেন সৌম্য-রিয়াদ। এরপর খেলেন ১৭১ বলে ১৪৯ রানের ইনিংস। যা সৌম্যর প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ। ২১টি চারের সঙ্গে ছক্কা ৫টি।
মাহমুদউল্লাহ সেঞ্চুরি করেন ১৮৩ বলে। ২০১০ সালে এই হ্যামিল্টনেই করেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরির পেরিয়ে যান নিজের আগের সেরা ১৩৬ রান। কিন্তু অন্য প্রান্তে উইকেট হারাতেই থাকে দল। লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ দ্রুত ফিরে যান। এক পর্যায়ে ২১ চার ও ৩ ছক্কায় ২২৯ বলে ১৪৬ রানে থামেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
ম্যাচে বিজে ওয়াটলিং গড়েন রেকর্ড। অ্যাডাম প্যারোরের ২০১ ডিসিমিসালের রেকর্ড ভেঙে নিউজিল্যান্ড ইতিহাসের সেরা কিপার এখন তিনিই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৩৪/১০
নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৬৩ ওভারে ৭১৫/৬ (ইনিংস ঘোষণা)
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ১০৩ ওভারে ৪২৯/১০ (আগের দিন ১৭৪/৪) (সৌম্য ১৪৯, মাহমুদউল্লাহ ১৪৬, লিটন ১, মিরাজ ১, আবু জায়েদ ৩, খালেদ ৪*, ইবাদত ০; বোল্ট ২৮-৩-১২৩-৫, সাউদি ২৪-৪-৯৮-৩, ডি গ্র্যান্ডহোম ১০-১-৩৩-০, ওয়েগনার ২৪-৪-১০৪-২, অ্যাস্টল ১৫-৩-৫৮-০, উইলিয়ামসন ২-০-১৩-০)।
ফল: ইনিংস ও ৫২ রানে জয়ী নিউজিল্যান্ড
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে নিউজিল্যান্ড ১-০তে এগিয়ে
ম্যাচসেরা: কেন উইলিয়ামসন
Discussion about this post