ক্রিকেট মাঠে তারা ছিলেন নায়ক। কেউ ছিলেন প্রথম সূর্য, কেউ ছিলেন নিরব অভিভাবক, কেউ বা পথিকৃৎ। কেউ শাসন করেছেন ব্যাট হাতে, কেউ বল হাতে নিপুণতা ছড়িয়েছেন, কেউ নেতৃত্ব দিয়ে একেকটি প্রজন্ম গড়েছেন। সেই কীর্তিগাথাকে এবার অফিশিয়াল স্বীকৃতি দিল আইসিসি। ২০২৫ সালের আইসিসি হল অব ফেমে যুক্ত হলেন সাতজন কিংবদন্তি।
ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে বলা যায় ক্যাপ্টেন কুল। তিনটি আইসিসি ট্রফি, নির্ভার কৌশল, আর ব্যাটিংয়ে স্থিতিশীলতা-সব মিলিয়ে ধোনি শুধু জিতিয়েই যাননি, জয়ের ধরনটাই বদলে দিয়েছেন। ৩৫০ ওয়ানডে, ১০,৭৭৩ রান, আর বিশ্বজয়ের গল্প নিয়ে এবার চিরস্থায়ী হলেন ক্রিকেটের হল অব ফেমে।
অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেইডেন ছিলেন এক বিস্ফোরণ। পাওয়ার প্লের স্বপ্নে কাঁটা হয়ে থাকতেন প্রতিপক্ষের জন্য। ২০০৭ বিশ্বকাপে তিনটি সেঞ্চুরি, ২০০৩ সালে শিরোপা—তাকে শুধুই ওপেনার বললে কম বলা হয়। তিনি ছিলেন সময়ের আগের এক আধিপত্যশীল ব্যাটার।
গ্রায়েম স্মিথ ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় নেতা—টেস্ট ইতিহাসে একমাত্র ১০০-এর বেশি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা ক্রিকেটার। তার নেতৃত্বেই সাউথ আফ্রিকা জিতেছে ৫৩টি টেস্ট, যা নেতৃত্বের ধারাবাহিকতার এক অপূর্ব উদাহরণ।
নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে পাকিস্তানের সানা মীর একটি আলাদা অধ্যায়। তিনিই প্রথম পাকিস্তানি নারী ক্রিকেটার যিনি হল অব ফেমের জায়গা করে নিয়েছেন। ২০১৮ সালে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে বোলারদের শীর্ষে উঠেছিলেন। ১২০ ওয়ানডে, ১০৬ টি–টোয়েন্টি—তিনিই ছিলেন এক সাহসী নেতৃত্বের প্রতীক।
সাউথ আফ্রিকার ব্যাটিং কিংবদন্তি হাশিম আমলা ছিলেন এমন এক ক্রিকেটার, যিনি শব্দে নয়, ব্যাটে কথা বলতেন। তিনিই দেশের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান, করেছেন শতাধিক আন্তর্জাতিক ম্যাচে ফিফটি বা সেঞ্চুরি। গেমপ্ল্যান নয়, আত্মস্থতা ছিল তার আসল শক্তি।
নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেট্টোরি ছিলেন এমন এক খেলোয়াড়, যিনি ব্যাট, বল এবং নেতৃত্ব—সব ক্ষেত্রেই কার্যকর ছিলেন। মাত্র তিনজন ক্রিকেটার টেস্টে করেছেন ৪০০০ রান ও নিয়েছেন ৩০০ উইকেট—তিনি তাদের একজন। তার অধীনে কিউইরা ২০০৯ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রানার্সআপ হয়েছিল।
ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার সারাহ টেলর ছিলেন নারী ক্রিকেটের এক ‘রোল মডেল’। অসাধারণ কিপিং, ২৩২ ডিসমিসাল, আর ২০০৯ ও ২০১৭ সালে বিশ্বকাপজয়ী দলের নির্ভরতার প্রতীক। তার কিপিং ছিল শৈল্পিক, ছিল শিখনীয়।
Discussion about this post